ব্রিটেনে প্রথমবার শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের অতিসংক্রামক নতুন ধরণ বিদ্যমান ধরণের চেয়ে ৩০ থেকে ১০০ শতাংশ বেশি প্রাণঘাতী বলে বুধবার যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে। খবর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
ব্রিটেনে করোনার বিদ্যমান ধরনটির সঙ্গে বি.১.১.৭ নামে পরিচিত অতিসংক্রামক নতুন ধরণটিতে যেসব মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, উভয় দলের মধ্যে তুলনাত্মক বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন ধরনটিতে মৃত্যুহার ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি’।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা আগের ধরনটির চেয়ে অনেকে বেশি প্রাণঘাতী এবং আনুমানিক ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনে প্রথম মহামারি করোনার নতুন এই ধরনটি শনাক্ত হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক দেশে ধরণটি শনাক্ত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকেই নতুন এই ধরণকে আরো বেশি প্রাণঘাতী বর্ণনা করে সতর্ক করে আসছেন।
করোনার নতুন এই ধরনটি বিদ্যমান ধরণের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক ও তা সহজে বিস্তার ছড়ায় জানিয়ে, বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা আগের ধরণটির চেয়ে অনেকে বেশি প্রাণঘাতী এবং আনুমানিক ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
গবেষণা নিবন্ধটি বুধবার ‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’ নামের চিকিসা সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, নতুন ধরনে আক্রান্ত ৫৪ হাজার ৯০৬ জন রোগীর ২২৭ জন এবং বিদ্যমান ধরণে আক্রান্ত একই সংখ্যক রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের।
গবেষণাটি যেসব গবেষক করেছেন তাদের একজন এক্সেটার ইউনিভার্সিটির রবার্ট চ্যালেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘দ্রুত বিস্তার ঘটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ধরন বি.১.১.৭-কে হুমকি হিসেবে তুলে ধরেছে, ফলে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেওয়া উচিত।’
ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন এই ধরণটি গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে পাওয়া যায়। তবে বুধবার (১০ মার্চ) সে তথ্য জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর।
আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বুধবার বলেছেন, জানুয়ারির শুরুতেই যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের মধ্যে নতুন এই ধরণ প্রথম শনাক্ত হয়। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
সেখানে তার শরীর থেকে সংগ্রহকৃত নমুনার জিনতত্ত্ব উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) করে আইইডিসিআর করোনার নতুন ওই ধরণ শনাক্ত করে। জানুয়ারির শুরুতে নতুন ধরণ শনাক্ত হলেও, তা আগে কেনো জানানো হয়নি, সে প্রশ্নের জবাব অবশ্য দেননি তিনি।
অধ্যাপক শিরিন বলেছেন, জানুয়ারির শুরুতে ঢাকায় প্রথম শরীরে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনবাহী একজন শনাক্ত হন। এরপর সিলেটেন ওসমানী বিমানবন্দরে নামা যাত্রীদের মধ্য থেকেও ভাইরাসের নতুন ধরণে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।