দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্তরা খুব দ্রুত মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
করোনার তীব্রতা বেড়েছে বলে শনিবার রাতে আইইডিসিআর এক বুলেটিনে বলা হয়।
আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, করোনায় মার্চে মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৩৮, যা এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪১ জনে। সে হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৩২ দশমিক ২ শতাংশ।
১৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার ৪৪ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, যারা মারা গেছেন, তাদের ৫২ শতাংশই উপসর্গ শুরুর পাঁচদিনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২৬ শতাংশ পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এবং উপসর্গ শুরুর ১১ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ১২ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হন।
আইইডিসিআরের প্রতিবেদনে জানানো হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পাঁচদিনের মধ্যে মারা গেছেন ৪৮ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৬ শতাংশ করোনা রোগীর। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এখন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী খুব দ্রুত মৃত্যুবরণ করছেন।
এদিকে রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দুদিন ১০১ জন করে মৃত্যু বরণ করেছিল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জনে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৬ হাজার ১২১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৮ হাজার ৯২৮টি। পরীক্ষা করা হয় ১৯ হাজার ৪০৪টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
হাসপাতালে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পাঁচ দিনের মধ্যে মারা গেছেন। আর ৫ থেকে ১০ দিনের ভেতরে মারা গেছেন ১৬ শতাংশ।
করোনা এবার নারীরা অধিক হারে মারা যাচ্ছেন জানিয়ে আইইডিসিআর বলছে, গত বছরের জুলাই মাসে করোনায় ২২৬ জন নারীর বিপরীতে ৯৮২ জন পুরুষ হাসপাতালে মারা যান। আর এ বছরের এপ্রিলে ২৬০ জন নারীর বিপরীতে ৬১৪ জন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে।