ঢাকা ১০:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা প্রতিরোধে কাজ করছে কোভিশিল্ড: আইইডিসিআর

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১
  • ২৪৯ Time View
টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের শরীরে চারগুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। বুধবার (১২মে) আইইডিসিআরের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত করোনা প্রতিরোধী টিকা কোভিশিল্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় তৈরি।

আইইডিসিআর জানায়, বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা (কোডিশিল্ড) দেওয়া শুরু হয়। এরপর থেকে আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর-বি যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের রক্তে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত গবেষণা পরিচালনা করে। এই গবেষণায় দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৬ হাজার ৩০০ জন টিকা গ্রহণকারীর মধ্যে টিকা গ্রহণের পরবর্তী দুই বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

টিকাগ্রহীতাদের দেহে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষার ফল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

কারও দেহে কোনো ভাইরাস কিংবা জীবাণুর সংক্রমণ হলে এর বিরুদ্ধে লড়তে শরীরই এক পর্যায়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরি করে নেয়, যাকে বলে অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী সময়ে একই ধরনের জীবাণু দেখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা প্রতিরোধ করে।

বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড দিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে এ পর্যন্ত ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৫ জন মানুষকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরুর পর এ পর্যন্ত তা নিয়েছেন ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ১৫৩ জন।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরুর পর থেকে আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে। ছয় হাজার ৩০০ টিকাগ্রহীতার টিকা গ্রহণের পরবর্তী দুই বছর বিভিন্ন সময় রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনা করে আইইডিসিআর বলছে, কোভিশিল্ড গ্রহণকারী ১২০ জনের মধ্যে  এক মাস পর ৯২ শতাংশ এবং দুই মাস পর ৯৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

“অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে সব বয়সী মানুষের শরীরে। অন্যান্য অসুস্থতা থাকা বা না থাকার সঙ্গে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। টিকাগ্রহীতা, যাদের মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তাদের শরীরে চারগুণ বেশি অ্যান্টবডি তৈরি হয়েছে।”

“এতে প্রতীয়মাণ হয়, বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে,” উপসংহার টেনেছে আইইডিসিআর।

সংস্থাটি বলছে, চলমান গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে টিকাগ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।

Tag :

করোনা প্রতিরোধে কাজ করছে কোভিশিল্ড: আইইডিসিআর

Update Time : ০৫:৩৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১
টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের শরীরে চারগুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। বুধবার (১২মে) আইইডিসিআরের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত করোনা প্রতিরোধী টিকা কোভিশিল্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় তৈরি।

আইইডিসিআর জানায়, বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা (কোডিশিল্ড) দেওয়া শুরু হয়। এরপর থেকে আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআর-বি যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের রক্তে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত গবেষণা পরিচালনা করে। এই গবেষণায় দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৬ হাজার ৩০০ জন টিকা গ্রহণকারীর মধ্যে টিকা গ্রহণের পরবর্তী দুই বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

টিকাগ্রহীতাদের দেহে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পরীক্ষার ফল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

কারও দেহে কোনো ভাইরাস কিংবা জীবাণুর সংক্রমণ হলে এর বিরুদ্ধে লড়তে শরীরই এক পর্যায়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরি করে নেয়, যাকে বলে অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী সময়ে একই ধরনের জীবাণু দেখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা প্রতিরোধ করে।

বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড দিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে এ পর্যন্ত ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৫ জন মানুষকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরুর পর এ পর্যন্ত তা নিয়েছেন ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ১৫৩ জন।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরুর পর থেকে আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে। ছয় হাজার ৩০০ টিকাগ্রহীতার টিকা গ্রহণের পরবর্তী দুই বছর বিভিন্ন সময় রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।

এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনা করে আইইডিসিআর বলছে, কোভিশিল্ড গ্রহণকারী ১২০ জনের মধ্যে  এক মাস পর ৯২ শতাংশ এবং দুই মাস পর ৯৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

“অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে সব বয়সী মানুষের শরীরে। অন্যান্য অসুস্থতা থাকা বা না থাকার সঙ্গে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। টিকাগ্রহীতা, যাদের মধ্যে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তাদের শরীরে চারগুণ বেশি অ্যান্টবডি তৈরি হয়েছে।”

“এতে প্রতীয়মাণ হয়, বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে,” উপসংহার টেনেছে আইইডিসিআর।

সংস্থাটি বলছে, চলমান গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে টিকাগ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।