ঢাকা ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব ফ্লোটিলা নৌবহরের ২৪টি জাহাজ গাজার জলসীমায় পৌঁছে গেছে কাতারে হামলা হলে পাল্টা হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার ৩০ জাহাজ, আর মাত্র ৮৫ কিমি গাজামুখী নৌবহর থেকে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক কর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল ইসরায়েলি বাহিনীর অবরোধে গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলা শুভ বিজয়া দশমী : আজ প্রতিমা বিসর্জন, মন্দিরে বিদায়ের সুর প্যারিস ফ্যাশন উইকে ঐশ্বরিয়ার উপস্থিতি নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী তারকা এখন শাহরুখ খান

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকাতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একাধিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে

ইসরায়েলের নৌ-অবরোধ উপেক্ষা করে গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’।

বহরটি আটকাতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একাধিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে বলে বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে জানান ফ্লোটিলার মাগরেব শাখার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার।

ফ্লোটিলার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানান, ইসরায়েলি নৌবাহিনী প্রথমে বহরের মূল জাহাজ ‘আলমা’কে আটকাতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বহরের বাকি জাহাজগুলো নির্বিঘ্নে পাশ কাটিয়ে যায়। তিনি দ্বিতীয় আরেকটি চেষ্টার বর্ণনা দেন, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী অন্য একটি অগ্রগামী জাহাজ ‘সিরিয়াস’-এর দিকে লক্ষ্য পরিবর্তন করে, কিন্তু সেখানেও বাকি জাহাজগুলো তাকে এড়িয়ে এগিয়ে যায়।

নাওয়ার বলেন, “আজকে জায়নবাদী (ইসরায়েলি) জাহাজগুলো মূল জাহাজ ‘আলমা’-কে আটকানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অন্যান্য জাহাজগুলো ‘আলমা’-কে উপেক্ষা করে গাজার দিকে এগিয়ে যায়।” তিনি আরও যোগ করেন, যখন ফ্লোটিলা ‘সিরিয়াস’-এর আশেপাশে পুনরায় একত্রিত হয়, তখন ইসরায়েলি নৌবাহিনী সেদিকে মনোযোগ দেয়। কিন্তু একই ফল হয়, কারণ “বহরের বাকি জাহাজগুলো ‘সিরিয়াস’-কে উপেক্ষা করে গাজার পথে যাত্রা অব্যাহত রাখে।”

তিনি জানান, এরপর ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজগুলো বহরটিকে ছত্রভঙ্গ করতে একাধিক দিক থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে, কিন্তু সমস্ত জাহাজ কৌশলে নিজস্ব পথে অবিচল থাকে। তিনি এই বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টাগুলোকে ফ্লোটিলার সংকল্পের একটি পরীক্ষা হিসেবে বর্ণনা করেন: “যদি আপনারা ৪৭টি জাহাজকেও থামিয়ে দেন, তবুও ৪৮তমটি গাজার দিকে এগিয়ে যাবে।”

এর আগে দিনের বেলায়, গাজাগামী এই মানবিক সহায়তা ফ্লোটিলার কাছাকাছি একটি বড় যুদ্ধজাহাজ দেখা গিয়েছিল এবং আয়োজকরা সমুদ্রে উচ্চ সতর্কতার কথা জানিয়েছিলেন।

ফ্লোটিলার সাথে থাকা আল জাজিরার একজন সংবাদদাতার মতে, কিছুক্ষণ বিচ্ছিন্ন থাকার পর ‘আলমা’ জাহাজের সাথে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সংবাদদাতার ভাষ্য অনুযায়ী, একটি ইসরায়েলি জাহাজ ‘আলমা’র খুব কাছাকাছি মাত্র পাঁচ ফুটের মধ্যে চলে এসেছিল এবং এর সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, এমনকি ইঞ্জিনও জ্যাম করে অকার্যকর করে দিয়েছিল। তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুযায়ী ‘আলমা’-তে থাকা অংশগ্রহণকারীরা তাদের মোবাইল ফোন সমুদ্রে ফেলে দেন।

সংবাদদাতা পরে জানান, ইসরায়েলি জাহাজটি এলাকা ছেড়ে চলে গেলে ফ্লোটিলাটি গাজা উপত্যকার উপকূলের দিকে তাদের যাত্রা পুনরায় শুরু করে।

ইসরায়েলের অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতে যাত্রা করা এই ফ্লোটিলা ঘোষণা করেছে যে, তাদের জাহাজগুলো বর্তমানে অবরুদ্ধ গাজা থেকে প্রায় ১২১ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ৬৬,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অবিরাম বোমা হামলায় গাজা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ ও রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

Tag :
জনপ্রিয়

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ আটকাতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একাধিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে

Update Time : ১২:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

ইসরায়েলের নৌ-অবরোধ উপেক্ষা করে গাজার উদ্দেশে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’।

বহরটি আটকাতে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একাধিক কৌশল ব্যর্থ হয়েছে বলে বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে জানান ফ্লোটিলার মাগরেব শাখার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার।

ফ্লোটিলার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানান, ইসরায়েলি নৌবাহিনী প্রথমে বহরের মূল জাহাজ ‘আলমা’কে আটকাতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বহরের বাকি জাহাজগুলো নির্বিঘ্নে পাশ কাটিয়ে যায়। তিনি দ্বিতীয় আরেকটি চেষ্টার বর্ণনা দেন, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী অন্য একটি অগ্রগামী জাহাজ ‘সিরিয়াস’-এর দিকে লক্ষ্য পরিবর্তন করে, কিন্তু সেখানেও বাকি জাহাজগুলো তাকে এড়িয়ে এগিয়ে যায়।

নাওয়ার বলেন, “আজকে জায়নবাদী (ইসরায়েলি) জাহাজগুলো মূল জাহাজ ‘আলমা’-কে আটকানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অন্যান্য জাহাজগুলো ‘আলমা’-কে উপেক্ষা করে গাজার দিকে এগিয়ে যায়।” তিনি আরও যোগ করেন, যখন ফ্লোটিলা ‘সিরিয়াস’-এর আশেপাশে পুনরায় একত্রিত হয়, তখন ইসরায়েলি নৌবাহিনী সেদিকে মনোযোগ দেয়। কিন্তু একই ফল হয়, কারণ “বহরের বাকি জাহাজগুলো ‘সিরিয়াস’-কে উপেক্ষা করে গাজার পথে যাত্রা অব্যাহত রাখে।”

তিনি জানান, এরপর ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজগুলো বহরটিকে ছত্রভঙ্গ করতে একাধিক দিক থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে, কিন্তু সমস্ত জাহাজ কৌশলে নিজস্ব পথে অবিচল থাকে। তিনি এই বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টাগুলোকে ফ্লোটিলার সংকল্পের একটি পরীক্ষা হিসেবে বর্ণনা করেন: “যদি আপনারা ৪৭টি জাহাজকেও থামিয়ে দেন, তবুও ৪৮তমটি গাজার দিকে এগিয়ে যাবে।”

এর আগে দিনের বেলায়, গাজাগামী এই মানবিক সহায়তা ফ্লোটিলার কাছাকাছি একটি বড় যুদ্ধজাহাজ দেখা গিয়েছিল এবং আয়োজকরা সমুদ্রে উচ্চ সতর্কতার কথা জানিয়েছিলেন।

ফ্লোটিলার সাথে থাকা আল জাজিরার একজন সংবাদদাতার মতে, কিছুক্ষণ বিচ্ছিন্ন থাকার পর ‘আলমা’ জাহাজের সাথে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সংবাদদাতার ভাষ্য অনুযায়ী, একটি ইসরায়েলি জাহাজ ‘আলমা’র খুব কাছাকাছি মাত্র পাঁচ ফুটের মধ্যে চলে এসেছিল এবং এর সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, এমনকি ইঞ্জিনও জ্যাম করে অকার্যকর করে দিয়েছিল। তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠিত নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুযায়ী ‘আলমা’-তে থাকা অংশগ্রহণকারীরা তাদের মোবাইল ফোন সমুদ্রে ফেলে দেন।

সংবাদদাতা পরে জানান, ইসরায়েলি জাহাজটি এলাকা ছেড়ে চলে গেলে ফ্লোটিলাটি গাজা উপত্যকার উপকূলের দিকে তাদের যাত্রা পুনরায় শুরু করে।

ইসরায়েলের অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতে যাত্রা করা এই ফ্লোটিলা ঘোষণা করেছে যে, তাদের জাহাজগুলো বর্তমানে অবরুদ্ধ গাজা থেকে প্রায় ১২১ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ৬৬,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অবিরাম বোমা হামলায় গাজা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং সেখানে দুর্ভিক্ষ ও রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।