ঢাকায় জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের ৬৯ শতাংশের শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইসিডিডিআরবি। আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা সংস্থা, বাংলাদেশ বা আইসিডিডিআরবি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অন্ততপক্ষে ওমিক্রনের তিনটি সাব-টাইপ ঢাকা শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।
সংস্থাটি জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ৩৭৯ জন কোভিড-১৯ রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এসব তথ্য পেয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬০ জনই ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হয়েছেন, শতকরা হিসাবে তা ৬৯ শতাংশ। ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে অন্য সব ভ্যারিয়ান্ট দেশে করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রন শনাক্ত হয় ৬ই ডিসেম্বর। সেই সময় ৭৭ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচ জনের শরীরে ওমিক্রন পেয়েছিল আইসিডিডিআর, বি। বাকিরা ছিলেন ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত। কিন্তু জানুয়ারি মাসে সেই চিত্র বদলে গেছে। এখন ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট বেশি শনাক্ত হচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের একশোর বেশি দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এই ধরনটি করোনা ভাইরাসের অন্যান্য ভ্যারিয়ান্টেরে তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন।
আইসিডিডিআর,বি একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের আলফা ভ্যারিয়ান্টের আধিপত্য ছিল। গত বছরের মার্চ মাসে বেটা ভ্যারিয়ান্ট শনাক্ত হয়। মে মাসের মধ্যেই সেই ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা অন্যগুলো ধরনকে ছাড়িয়ে যায়। ২০২১ সালের মে মাস নাগাদ ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট শনাক্ত হয়। সেই বছরের জুন মাস নাগাদ আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয় ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট।
আইসিডিডিআরবি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা ২৯ জন ওমিক্রন আক্রান্তের টেলিফোন সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন আর নারী ১৬ জন। এদের মধ্যে ২৪ জনই কোভিড-১৯ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন আর তিনজন পেয়েছেন প্রথম ডোজের টিকা। তাদের কারও মধ্যে হালকা উপসর্গ দেখা গেছে, কারও মধ্যে কোন উপসর্গই দেখা যায়নি। এই ২৯ জন আক্রান্তের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এদের একজন শুধুমাত্র সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। অন্য কেউই দেশের বাইরে ভ্রমণ করেননি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রবিবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন আক্রান্তের হার ৩১ দশমিক ২৯ শতাংশ। সেদিন দেশে একদিনে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৯০৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এ পর্যন্ত দেশে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ২২৩ জনের। যদিও গত সপ্তাহেও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় বলেছিল যে তখন পর্যন্ত ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের আধিপত্য বেশি।