করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শিশুদেরও ছাড়ছে না! প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুরোগীর সংখ্যা। এর সঙ্গে বাড়ছে ‘মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম ইন চিলড্রেন-এমআইএসসি’ রোগীও। রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে দেখা যায়—মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করে। রোগী সামলাতে হাসপাতালগুলোর হিমশিম অবস্থা।
ক্যানসার, কিডনির সমস্যা কিংবা জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মানো শিশুদের করোনা হলে তা গুরুতর অবস্থায় চলে যাচ্ছে। এমনকি মৃত্যুও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকগণ। কিন্তু নগরীর বেশির ভাগ নামি হাসপাতালেও নেই শিশু করোনা রোগীদের জন্য আলাদা আইসিইউ। কত শিশু বর্তমানে আক্রান্ত, নেই কোনো পরিসংখ্যানও।
শিশুরোগীরা কীভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়—এমন প্রশ্ন করলে ঢাকা শিশু হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক নওশাদ আহমেদ বলেন, সাধারণত বড়দের অসচেতনতা ও অন্য রোগের চিকিত্সা নিতে হাসপাতালে এসে শিশুরা করোনায় সংক্রমিত হয়। গত বছর জুন মাসে শিশু হাসপাতালে করোনা ইউনিট করা হলেও, এখানে কোনো আইসিইউর ব্যবস্থা নেই। তবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে এবং শতভাগ রোগীরই অক্সিজেন চাহিদা হাসপাতাল মেটাতে পারে।
এদিকে ঠিক কত শিশু এ পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত হয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শিশুর আলাদা করে তালিকা করে না। শিশু অধিকার ফোরাম শুরুর দিকে তালিকা করলেও এখন আর তা চালিয়ে নিতে পারছে না বলে জানান ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহীদ মাহমুদ।
বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মনসুর হোসেন বলেন, প্রথম ঢেউয়ে মোট আক্রান্তের ৩ শতাংশ ছিল ১০ বছরের নিচের শিশু। আর ৪.৫ শতাংশ ছিল ১৫ বছর পর্যন্ত শিশু রোগীর সংখ্যা। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বয়সভিত্তিক কোনো পরিসংখ্যান পাই না। হাসপাতাল ভিত্তিক কিছু পরিসংখ্যান মাঝেমধ্যে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শিশুদের জন্য গুরুতর হয়ে এসেছে। প্রথম ঢেউয়ে শিশু আক্রমণের হার কম ছিল। এখন অনেক বেশি। প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছুই খোলা। তাই বড়দের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।’