ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ফরিদপুরে চলাচলের অযোগ্য সড়ক মেরামত করলো যুবদল কর্মীরা আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই ইসরাইলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফায় ফের রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ, আহত ১০ বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে শিশুদের সুন্দর বিকাশের জন্য গুরুত্ব প্রদান করা আমাদের সবার দায়িত্ব রাস্তা ঘেষে বেকু দিয়ে মাটি কাটায় ধসে যাচ্ছে ফরিদপুর লেকপাড়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আজকের নামাজের সময়সূচি ৭ অক্টোবর আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে আন্তঃব্যাংকে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ডাক, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে

আজ ভোর হলেই শোকার্ত কাফেলা যাবে ঢাকার মিরপুর ও রায়েরবাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে। ফুলেল শ্রদ্ধায়, গান-কবিতা আর শপথে স্মরণ করা হবে একাত্তরের সূর্য সন্তানদের।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ডাক এসেছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রাক্কালে।

দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, তা গড়তে পারলেই বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

এদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে স্বাধীনতার ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাণীতে বলেন, “একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল, তারাই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্যে দিয়ে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে।

“তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়। সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়। খুন-হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়। মুক্তমনা, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। এই সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।”

“তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়। সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়। খুন-হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়। মুক্তমনা, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। এই সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।” বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের যারা রক্ষার চেষ্টা করেছে তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় আনা হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।
“২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে। বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। এই কুখ্যাত মানবতাবিরোধীদের যারা রক্ষার চেষ্টা করছে, তাদেরও একদিন বিচার হবে।”
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণীতে বলেন, “বলার অপেক্ষা রাখে না যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা,সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারতেন।কিন্তু ঘাতকের নির্মমতায় তারা সেটি পারেননি।
“শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ তখনই স্বার্থক হবে ,যখন আমরা তাঁদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে পারব।  সকলেই মিলেমিশে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করে যাব।”
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপির এক বার্তায় বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তা এখন নির্বাসনে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সার্বজনীন অধিকার, সেটি সমুন্নত রাখতে আমাদের মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।”
একাত্তরের ডিসেম্বরের মধ্যভাগে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় যখন অনিবার্য; তখন এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে বাংলাদেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীদের, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেওয়া।
প্রায় অর্ধ শতক পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জনের একটি তালিকা করেছে সরকার।
এবার করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে সব আয়োজনই সঙ্কুচিত হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্বেও স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকটি বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সোমবার সারা দিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ রাখবে।
সকাল ৯টায় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানাবেন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে। সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। পরে তারা যাবেন রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে, সেখানে তারা শ্রদ্ধা জানাবেন সকাল ১০টায়।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় দলের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে থাকবেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে উপলক্ষে বিএনপি সকাল ৯টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবি স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন। এদিন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাসদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়ে সোমবার ভোর ৬টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল ৯টায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা শ্রদ্ধা জানাবেন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে।
শিল্পকলা একাডেমি রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে কবি কণ্ঠে কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হবে সোমবার রাত ৮টায়। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী।
সম্প্রতি প্রয়াত মুক্তিযুদ্ধের গবেষক বাংলা একাডেমি থেকে তের খন্ডে প্রকাশিত স্মৃতি ‘৭১ গ্রন্থের সম্পাদক রশীদ হায়দার স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করবেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সদস্য শেখ সালমা নার্গিস, সৈয়দা সালমা হক ও রশীদ হায়দারের কন্যা শাওন্তী হায়দার।
বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে তারা।
Tag :
জনপ্রিয়

ফরিদপুরে চলাচলের অযোগ্য সড়ক মেরামত করলো যুবদল কর্মীরা

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ডাক, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে

Update Time : ০৭:৪৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

আজ ভোর হলেই শোকার্ত কাফেলা যাবে ঢাকার মিরপুর ও রায়েরবাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে। ফুলেল শ্রদ্ধায়, গান-কবিতা আর শপথে স্মরণ করা হবে একাত্তরের সূর্য সন্তানদের।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ডাক এসেছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রাক্কালে।

দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, তা গড়তে পারলেই বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

এদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে স্বাধীনতার ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাণীতে বলেন, “একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল, তারাই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্যে দিয়ে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে।

“তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়। সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়। খুন-হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়। মুক্তমনা, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। এই সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।”

“তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসকে বিকৃত করে। দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়। সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়। খুন-হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়। মুক্তমনা, শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। এই সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশে সন্ত্রাস ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।” বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের যারা রক্ষার চেষ্টা করেছে তাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় আনা হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।
“২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে। বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। এই কুখ্যাত মানবতাবিরোধীদের যারা রক্ষার চেষ্টা করছে, তাদেরও একদিন বিচার হবে।”
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাণীতে বলেন, “বলার অপেক্ষা রাখে না যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা,সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারতেন।কিন্তু ঘাতকের নির্মমতায় তারা সেটি পারেননি।
“শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ তখনই স্বার্থক হবে ,যখন আমরা তাঁদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে পারব।  সকলেই মিলেমিশে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করে যাব।”
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপির এক বার্তায় বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তা এখন নির্বাসনে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সার্বজনীন অধিকার, সেটি সমুন্নত রাখতে আমাদের মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।”
একাত্তরের ডিসেম্বরের মধ্যভাগে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় যখন অনিবার্য; তখন এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে বাংলাদেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীদের, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেওয়া।
প্রায় অর্ধ শতক পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জনের একটি তালিকা করেছে সরকার।
এবার করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে সব আয়োজনই সঙ্কুচিত হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্বেও স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকটি বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সোমবার সারা দিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ রাখবে।
সকাল ৯টায় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানাবেন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে। সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। পরে তারা যাবেন রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে, সেখানে তারা শ্রদ্ধা জানাবেন সকাল ১০টায়।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় দলের শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে থাকবেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে উপলক্ষে বিএনপি সকাল ৯টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবি স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন। এদিন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাসদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়ে সোমবার ভোর ৬টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল ৯টায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা শ্রদ্ধা জানাবেন মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে।
শিল্পকলা একাডেমি রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে কবি কণ্ঠে কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হবে সোমবার রাত ৮টায়। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী।
সম্প্রতি প্রয়াত মুক্তিযুদ্ধের গবেষক বাংলা একাডেমি থেকে তের খন্ডে প্রকাশিত স্মৃতি ‘৭১ গ্রন্থের সম্পাদক রশীদ হায়দার স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করবেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সদস্য শেখ সালমা নার্গিস, সৈয়দা সালমা হক ও রশীদ হায়দারের কন্যা শাওন্তী হায়দার।
বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে তারা।