ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ভারতীয় আধিপত্য তাড়াইয়া আমেরিকা ওয়াশিংটনের আধিপত্যের শিকার হতে চাই না- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব পাকিস্তানের মানচিত্রে অবস্থান ধরে রাখতে রাষ্ট্রীয় মদদের সন্ত্রাসবাদ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে: ভারতীয় সেনাপ্রধান ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে গাজায় অভিযান সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতে রাজি ইসরায়েল জার্মানির আকাশে গত ২৪ ঘণ্টায় একাধিক ড্রোন; বন্ধ হলো মিউনিখ বিমানবন্দর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শান্তি প্রস্তাবে জবাব দিয়েছে হামাস, ইসরায়েলকে বোমাবর্ষণ থামাতে ট্রাম্পের আহ্বান ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা পরিকল্পনার বিষয়ে জবাব দিয়েছে হামাস এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ৩ অক্টোবর ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৪ অক্টোবর

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলেন আব্দুলরাজাক গুরনাহ

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক আব্দুলরাজাক গুরনাহ। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে নোবেল কমিটি নাম ঘোষণা করে। সাহিত্যের এই নোবেলজয়ী পুরস্কারের অংশ হিসেবে ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোন পাবেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস স্বর্গ (প্যারাডাইজ)। প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। এটি প্রকাশের পর তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। এ উপন্যাসের জন্য বুকার পুরস্কারেও ভূষিত হন। নোবেল কমিটির সাহিত্য পুরস্কার বিষয়ের প্রধান আন্দ্রেজ ওলসেন বলেন, তিনি হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সেরা উত্তর-ঔপনিবেশিক লেখক।

নোবেল কমিটি তার বিবৃততে জানায়, ঔপনিবেশিকতার প্রভাব এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মহাদেশগুলোর অপরিমেয় দূরত্বের মাঝে থাকা উদ্বাস্তুদের ভাগ্য অনুধাবনে নিরাপোষী এবং আন্তরিক মনোভাব ও গভীরতা অর্জনের জন্য তাকে এ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। স্বর্গ নামে তার চতুর্থ উপন্যাসের জন্য গুনরাহ এ সম্মাননা পেলেন।

ইংল্যান্ডে প্রবাস জীবন যাপনকালে ২১ বছর বয়সে তিনি লেখালেখি শুরু করেন। সোয়াহিলি তার প্রথম ভাষা। তবে ইংরেজি ভাষাই তার লেখার মাধ্যম হয়ে ওঠে।

স্বর্গ ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে আছে বিদায়ের স্মৃতি (১৯৮৭), তীর্থযাত্রীর পথ (১৯৮৮), দত্তাই (১৯৯০), নীরবতার প্রশংসায় (১৯৯৬) সমুদ্র সৈকতে (২০০১), শেষ উপহার (২০১১) ও পারলৌকিক (২০২০) । তার একটি ছোটগল্পের বই আছে- আফ্রিকার এক খামারে থাকতেন আমার মা (২০০৬)।

তানজানিয়ায় ১৯৪৮ সালে গুরনাহ জন্মগ্রহণ করেন। ভারত মহাসাগরের জানজিবার দ্বীপে তিনি বেড়ে ওঠেন। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে ইংল্যান্ডে আসেন শরণার্থী হয়ে।

১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয় জানজিবার। প্রেসিডেন্ট আবেইদ কারুমের শাসনে সেখানে আরব বংশোদ্ভূত নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে স্কুল শেষ করে আট বছর বয়সে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

১৯৮৪ সালে আগে তিনি জানজিবারে ফিরতে পারেননি। কেবল বাবার মৃত্যুর আগে তার একবার দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের ইংরেজি ও ঔপনিবেশিক-উত্তর সাহিত্যের অধ্যাপনা থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন।
গত বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লিক। তার সম্পর্কে নোবেল পুরস্কার কমিটি জানিয়েছিল, সরল ও সৌন্দর্যময় সুস্পষ্ট কাব্যিক কণ্ঠস্বরের জন্য এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে গ্লুককে। তার কাব্যিক ঢং স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে সর্বজনীন করে তোলে। কবি লুইস গ্লুকের সর্বাধিক প্রশংসিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘দ্য উইল্ড আইরিস’। টেকনিকের অভিনবত্ব, সেনসিটিভিটি তথা স্পর্শকাতরতা তার কবিতার অস্থিমজ্জায়। ১৯৯৩ সালে টনি মরিসনের পর প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে এই পুরস্কার জিতেন গ্লুক। কবি লুইস গ্লুক ১৯৪৩ সালে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করলেও বেড়ে উঠেছেন ক্যামব্রিজ ও ম্যাসাচুসেটসে।
এর আগে যৌন কেলেঙ্কারির জেরে ২০১৮ সালে বিরতি দিয়ে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি ২০১৯ সালে দু’বারের নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করেছিল। নোবেল ফাউন্ডেশনের আস্থা ফিরে পেতে কমিটিতে ব্যাপক রদবদলও করা হয়। ২০১৮ সালের সাহিত্যের নোবেলজয়ী হিসেবে পোল্যান্ডের ওলগা তুকারচুক এবং ২০১৯ সালের বিজয়ী হিসেবে অস্ট্রিয়ার পিটার হ্যান্ডকে-কে বেছে নেয় সুইডিশ একাডেমি।

শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

ডিনামাইট আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেল ৩ কোটি ১০ লাখ ক্রোনার রেখে গিয়েছিলেন, বর্তমানে যা প্রায় ১৮০ কোটি ক্রোনের সমান। তার রেখে যাওয়া ওই অর্থ দিয়েই ১৯০১ সাল থেকে মর্যাদাপূর্ণ এ নোবেল পুরস্কারের প্রচলন করা হয়। এতদিন এ নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ছিল ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার। এবার দেয়া হবে এক কোটি ক্রোনার বা ৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

Tag :
জনপ্রিয়

ভারতীয় আধিপত্য তাড়াইয়া আমেরিকা ওয়াশিংটনের আধিপত্যের শিকার হতে চাই না- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলেন আব্দুলরাজাক গুরনাহ

Update Time : ১২:১৩:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক আব্দুলরাজাক গুরনাহ। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে নোবেল কমিটি নাম ঘোষণা করে। সাহিত্যের এই নোবেলজয়ী পুরস্কারের অংশ হিসেবে ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোন পাবেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস স্বর্গ (প্যারাডাইজ)। প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। এটি প্রকাশের পর তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। এ উপন্যাসের জন্য বুকার পুরস্কারেও ভূষিত হন। নোবেল কমিটির সাহিত্য পুরস্কার বিষয়ের প্রধান আন্দ্রেজ ওলসেন বলেন, তিনি হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সেরা উত্তর-ঔপনিবেশিক লেখক।

নোবেল কমিটি তার বিবৃততে জানায়, ঔপনিবেশিকতার প্রভাব এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মহাদেশগুলোর অপরিমেয় দূরত্বের মাঝে থাকা উদ্বাস্তুদের ভাগ্য অনুধাবনে নিরাপোষী এবং আন্তরিক মনোভাব ও গভীরতা অর্জনের জন্য তাকে এ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। স্বর্গ নামে তার চতুর্থ উপন্যাসের জন্য গুনরাহ এ সম্মাননা পেলেন।

ইংল্যান্ডে প্রবাস জীবন যাপনকালে ২১ বছর বয়সে তিনি লেখালেখি শুরু করেন। সোয়াহিলি তার প্রথম ভাষা। তবে ইংরেজি ভাষাই তার লেখার মাধ্যম হয়ে ওঠে।

স্বর্গ ছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে আছে বিদায়ের স্মৃতি (১৯৮৭), তীর্থযাত্রীর পথ (১৯৮৮), দত্তাই (১৯৯০), নীরবতার প্রশংসায় (১৯৯৬) সমুদ্র সৈকতে (২০০১), শেষ উপহার (২০১১) ও পারলৌকিক (২০২০) । তার একটি ছোটগল্পের বই আছে- আফ্রিকার এক খামারে থাকতেন আমার মা (২০০৬)।

তানজানিয়ায় ১৯৪৮ সালে গুরনাহ জন্মগ্রহণ করেন। ভারত মহাসাগরের জানজিবার দ্বীপে তিনি বেড়ে ওঠেন। কিন্তু ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে ইংল্যান্ডে আসেন শরণার্থী হয়ে।

১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয় জানজিবার। প্রেসিডেন্ট আবেইদ কারুমের শাসনে সেখানে আরব বংশোদ্ভূত নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে স্কুল শেষ করে আট বছর বয়সে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

১৯৮৪ সালে আগে তিনি জানজিবারে ফিরতে পারেননি। কেবল বাবার মৃত্যুর আগে তার একবার দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের ইংরেজি ও ঔপনিবেশিক-উত্তর সাহিত্যের অধ্যাপনা থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন।
গত বছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লিক। তার সম্পর্কে নোবেল পুরস্কার কমিটি জানিয়েছিল, সরল ও সৌন্দর্যময় সুস্পষ্ট কাব্যিক কণ্ঠস্বরের জন্য এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে গ্লুককে। তার কাব্যিক ঢং স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে সর্বজনীন করে তোলে। কবি লুইস গ্লুকের সর্বাধিক প্রশংসিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘দ্য উইল্ড আইরিস’। টেকনিকের অভিনবত্ব, সেনসিটিভিটি তথা স্পর্শকাতরতা তার কবিতার অস্থিমজ্জায়। ১৯৯৩ সালে টনি মরিসনের পর প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে এই পুরস্কার জিতেন গ্লুক। কবি লুইস গ্লুক ১৯৪৩ সালে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করলেও বেড়ে উঠেছেন ক্যামব্রিজ ও ম্যাসাচুসেটসে।
এর আগে যৌন কেলেঙ্কারির জেরে ২০১৮ সালে বিরতি দিয়ে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি ২০১৯ সালে দু’বারের নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করেছিল। নোবেল ফাউন্ডেশনের আস্থা ফিরে পেতে কমিটিতে ব্যাপক রদবদলও করা হয়। ২০১৮ সালের সাহিত্যের নোবেলজয়ী হিসেবে পোল্যান্ডের ওলগা তুকারচুক এবং ২০১৯ সালের বিজয়ী হিসেবে অস্ট্রিয়ার পিটার হ্যান্ডকে-কে বেছে নেয় সুইডিশ একাডেমি।

শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

ডিনামাইট আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেল ৩ কোটি ১০ লাখ ক্রোনার রেখে গিয়েছিলেন, বর্তমানে যা প্রায় ১৮০ কোটি ক্রোনের সমান। তার রেখে যাওয়া ওই অর্থ দিয়েই ১৯০১ সাল থেকে মর্যাদাপূর্ণ এ নোবেল পুরস্কারের প্রচলন করা হয়। এতদিন এ নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ছিল ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার। এবার দেয়া হবে এক কোটি ক্রোনার বা ৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।