ঢাকা ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ভারতীয় আধিপত্য তাড়াইয়া আমেরিকা ওয়াশিংটনের আধিপত্যের শিকার হতে চাই না- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব পাকিস্তানের মানচিত্রে অবস্থান ধরে রাখতে রাষ্ট্রীয় মদদের সন্ত্রাসবাদ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে: ভারতীয় সেনাপ্রধান ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে গাজায় অভিযান সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করতে রাজি ইসরায়েল জার্মানির আকাশে গত ২৪ ঘণ্টায় একাধিক ড্রোন; বন্ধ হলো মিউনিখ বিমানবন্দর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শান্তি প্রস্তাবে জবাব দিয়েছে হামাস, ইসরায়েলকে বোমাবর্ষণ থামাতে ট্রাম্পের আহ্বান ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা পরিকল্পনার বিষয়ে জবাব দিয়েছে হামাস এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ৩ অক্টোবর ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৪ অক্টোবর

করোনা ভাইরাস: ভারতে উৎপাদিত টিকা কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৪৫৬ Time View

ভারতে এখন দু’ধরনের করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে, আর প্রতিবেশী দেশগুলোতেও হাজার হাজার ডোজ টিকা পাঠিয়েছে ভারত।

ভারতের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এর মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি লোক টিকা নিয়েছেন। ভারতে দেয়া হচ্ছে দুই ধরণের টিকা।

একটি হচ্ছে যুক্তরাজ্যে উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা – ভারতে স্থানীয়ভাবে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কোভিশিল্ড’। আর দ্বিতীয়টি হলো কোভ্যাক্সিন – যা ভারত-বায়োটেক নামে একটি স্থানীয় ফার্মসিউটিক্যাল কোম্পানির তৈরি।

ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এই দুটি টিকাকেই সবুজ সংকেত দিয়েছে।

ভারতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার পরপরই দেশটি তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে হাজার হাজার ডোজ কোভিড-১৯এর টিকা পাঠিয়েছে।

এই টিকাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?

ভারতে উদ্ভাবিত কোভ্যাক্সিন কীভাবে কাজ করে?

টিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নেতৃস্থানীয় দেশ হলো ভারত। তাদের ছ’টি বড় আকারের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আছে যা পৃথিবীর ৬০ শতাংশ টিকা উৎপাদন করে।

ভারত বায়োটেক নামে ২৪ বছরের পুরোনো একটি টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি এই কোভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করেছে। তারা এযাবৎ ১৬টি টিকা তৈরি করেছে এবং ১২৩টি দেশে তা রপ্তানি করে থাকে।

কোভ্যক্সিন টিকাটি তৈরি হয়েছে মৃত করোনাভাইরাস দিয়ে – যাকে বলে ‘ইনএ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন’ – যা নিরাপদে ইনজেকশন আকারে মানুষের শরীরে দেয়া যায়।

ভারত বায়োটেক এ জন্য করোনাভাইরাসের একটি নমুনা ব্যবহার করেছে – যা পৃথক করেছে ভারতেরই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।

এটা মানবদেহে ইনজেকশন আকারে দেয়া হলে – রোগপ্রতিরোধী দেহকোষগুলো তখনও মৃত করোনাভাইরাসটিকে ‘চিনতে পারে’ এবং দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলে । তখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দেহে এ্যান্টিবডি তৈরি হতে থাকে।

কোভ্যাক্সিন কতবার নিতে হয়?

কোভ্যাক্সিন টিকার দুটি ডোজ নিতে হয় চার সপ্তাহের ব্যবধানে। ভ্যাক্সিনটি সংরক্ষণ করতে হয় ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।

ভারত বায়োটেক বলছে, তাদের কাছে দুই কোটি ডোজ কোভ্যাক্সিনের মজুত আছে।

তা ছাড়া তাদের লক্ষ্য, এ বছরের শেষ নাগাদ ভারতের দুটি শহরে থাকা তাদের চারটি কারখানা থেকে ৭০ কোটি টিকা তৈরি করা হবে।

কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কেন?

বিতর্কটা শুরু হয় ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি বক্তব্যের পর।

তারা জানায়, “জরুরি পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে সীমিত ব্যবহারের জন্য” এই টিকাটি অনুমোদিত হয়েছে।

তখন বিশেষজ্ঞরা বিস্ময় প্রকাশ করেন, যখন টিকাটির ট্রায়াল চলছে তখন কীভাবে লক্ষ লক্ষ ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জরুরি ব্যবহারের জন্য এটাকে অনুমোদন দেয়া হলো?

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে যে পদক্ষেপ নেয়া হবে

টিকা নেবার পর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে কী করা হবে, টিকার মান নিয়ন্ত্রণ এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করা বিষয়ক ১৭ পৃষ্ঠার একটি প্রোটকল আজ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে

ঢাকার হাসপাতালে হবে বঙ্গভ্যাক্স টিকার মানবদেহে পরীক্ষা

করোনাভাইরাস টিকাদানের খসড়া পরিকল্পনায় যা আছে

তাতে বলা আছে টিকা যারা নিচ্ছেন তাদের উপর কী প্রতিক্রিয়া হয় তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে যেখান থেকে টিকা দেয়া হয়েছে সেখানে জানাতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেখানেও জানানো যাবে।

যেসব হাসপাতালে টিকা দেয়া হবে তার সবগুলোতে একজন করে কর্মকর্তা থাকবেন যার দায়িত্ব হবে কারো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সে সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো।

কেন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।

কোন্ পদের কর্মকর্তারা সেটি করতে পারবেন সেটিও সুনির্দিষ্ট করে বলা আছে।

তবে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঘটনা তদন্ত করা হবে না। যেসব ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া গুরুতর, মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তির বিষয় রয়েছে শুধু সেগুলো তদন্ত করা হবে।

কোন গ্রামে দুই বা তার বেশি ব্যক্তির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে সেখানেও তদন্ত করা হবে।

তবে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সকল ঘটনা নথিভুক্ত করা হবে।

যিনি টিকা নিয়েছেন তিনি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত শুরু করতে হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে হবে।

টিকায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, প্রোটকলে সেটিও বলা আছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

Tag :
জনপ্রিয়

ভারতীয় আধিপত্য তাড়াইয়া আমেরিকা ওয়াশিংটনের আধিপত্যের শিকার হতে চাই না- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব

করোনা ভাইরাস: ভারতে উৎপাদিত টিকা কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড

Update Time : ০৭:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ভারতে এখন দু’ধরনের করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হচ্ছে, আর প্রতিবেশী দেশগুলোতেও হাজার হাজার ডোজ টিকা পাঠিয়েছে ভারত।

ভারতের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এর মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি লোক টিকা নিয়েছেন। ভারতে দেয়া হচ্ছে দুই ধরণের টিকা।

একটি হচ্ছে যুক্তরাজ্যে উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা – ভারতে স্থানীয়ভাবে যার নাম দেয়া হয়েছে ‘কোভিশিল্ড’। আর দ্বিতীয়টি হলো কোভ্যাক্সিন – যা ভারত-বায়োটেক নামে একটি স্থানীয় ফার্মসিউটিক্যাল কোম্পানির তৈরি।

ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এই দুটি টিকাকেই সবুজ সংকেত দিয়েছে।

ভারতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার পরপরই দেশটি তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে হাজার হাজার ডোজ কোভিড-১৯এর টিকা পাঠিয়েছে।

এই টিকাগুলো সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?

ভারতে উদ্ভাবিত কোভ্যাক্সিন কীভাবে কাজ করে?

টিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের এক নেতৃস্থানীয় দেশ হলো ভারত। তাদের ছ’টি বড় আকারের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আছে যা পৃথিবীর ৬০ শতাংশ টিকা উৎপাদন করে।

ভারত বায়োটেক নামে ২৪ বছরের পুরোনো একটি টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি এই কোভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করেছে। তারা এযাবৎ ১৬টি টিকা তৈরি করেছে এবং ১২৩টি দেশে তা রপ্তানি করে থাকে।

কোভ্যক্সিন টিকাটি তৈরি হয়েছে মৃত করোনাভাইরাস দিয়ে – যাকে বলে ‘ইনএ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন’ – যা নিরাপদে ইনজেকশন আকারে মানুষের শরীরে দেয়া যায়।

ভারত বায়োটেক এ জন্য করোনাভাইরাসের একটি নমুনা ব্যবহার করেছে – যা পৃথক করেছে ভারতেরই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।

এটা মানবদেহে ইনজেকশন আকারে দেয়া হলে – রোগপ্রতিরোধী দেহকোষগুলো তখনও মৃত করোনাভাইরাসটিকে ‘চিনতে পারে’ এবং দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলে । তখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দেহে এ্যান্টিবডি তৈরি হতে থাকে।

কোভ্যাক্সিন কতবার নিতে হয়?

কোভ্যাক্সিন টিকার দুটি ডোজ নিতে হয় চার সপ্তাহের ব্যবধানে। ভ্যাক্সিনটি সংরক্ষণ করতে হয় ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।

ভারত বায়োটেক বলছে, তাদের কাছে দুই কোটি ডোজ কোভ্যাক্সিনের মজুত আছে।

তা ছাড়া তাদের লক্ষ্য, এ বছরের শেষ নাগাদ ভারতের দুটি শহরে থাকা তাদের চারটি কারখানা থেকে ৭০ কোটি টিকা তৈরি করা হবে।

কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কেন?

বিতর্কটা শুরু হয় ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি বক্তব্যের পর।

তারা জানায়, “জরুরি পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে সীমিত ব্যবহারের জন্য” এই টিকাটি অনুমোদিত হয়েছে।

তখন বিশেষজ্ঞরা বিস্ময় প্রকাশ করেন, যখন টিকাটির ট্রায়াল চলছে তখন কীভাবে লক্ষ লক্ষ ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জরুরি ব্যবহারের জন্য এটাকে অনুমোদন দেয়া হলো?

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে যে পদক্ষেপ নেয়া হবে

টিকা নেবার পর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে কী করা হবে, টিকার মান নিয়ন্ত্রণ এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করা বিষয়ক ১৭ পৃষ্ঠার একটি প্রোটকল আজ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে

ঢাকার হাসপাতালে হবে বঙ্গভ্যাক্স টিকার মানবদেহে পরীক্ষা

করোনাভাইরাস টিকাদানের খসড়া পরিকল্পনায় যা আছে

তাতে বলা আছে টিকা যারা নিচ্ছেন তাদের উপর কী প্রতিক্রিয়া হয় তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।

কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে যেখান থেকে টিকা দেয়া হয়েছে সেখানে জানাতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেখানেও জানানো যাবে।

যেসব হাসপাতালে টিকা দেয়া হবে তার সবগুলোতে একজন করে কর্মকর্তা থাকবেন যার দায়িত্ব হবে কারো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সে সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো।

কেন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে সেটি তদন্ত করে দেখা হবে।

কোন্ পদের কর্মকর্তারা সেটি করতে পারবেন সেটিও সুনির্দিষ্ট করে বলা আছে।

তবে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঘটনা তদন্ত করা হবে না। যেসব ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া গুরুতর, মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তির বিষয় রয়েছে শুধু সেগুলো তদন্ত করা হবে।

কোন গ্রামে দুই বা তার বেশি ব্যক্তির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে সেখানেও তদন্ত করা হবে।

তবে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সকল ঘটনা নথিভুক্ত করা হবে।

যিনি টিকা নিয়েছেন তিনি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত শুরু করতে হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে হবে।

টিকায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, প্রোটকলে সেটিও বলা আছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা