গতকাল বুধবার চিত্রনায়িকা পরীমণিকে আটক করেছে র্যাব। আটকের পর পরীমণির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে।
পাশাপাশি গ্রেপ্তার হওয়া চলচিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ এবং আটক অন্য চারজনের বিরুদ্ধেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের পর সন্ধ্যার দিকে র্যাব সদস্যরা পরীমণি, রাজসহ গ্রেপ্তার হওয়া বাকিদের বনানী থানায় নিয়ে আসে। পরে মামলা রুজু শেষে তাদের কোর্টে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
পরীমণি ও রাজ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন পরীমণির সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু এবং রাজের প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সবুজ আলী।
খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন,পরীমণি ও দীপুর বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি ও মাদক আইনে এবং সবুজের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানিয়েছে, গত বুধবার র্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হওয়া পরীমণির বাসায় অভিযানে মিনি বারের সন্ধান পেয়েছেন র্যাব কর্মকর্তারা, যেখানে নিয়মিত ‘ঘরোয়া আয়োজন’ হত।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শামসুন নাহার স্মৃতি (স্মৃতিমনি বা পরীমণি) ২০১৬ সাল থেকে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তার ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। মাত্রাতিরিক্ত সেবনের চাহিদা মেটানোর লক্ষে বাসায় একটি মিনিবার স্থাপন করেছেন। মিনি বার থাকায় তার ফ্ল্যাটে ঘরোয়া পার্টি আয়োজন পরিপূর্ণতা পেত বলে তিনি জানান।
রাজধানীর বনানী থেকে মাদকসহ আটক চিত্রনায়িকা পরীমণি ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে র্যাব।
পরীমণির বাসা থেকে অবৈধ বিদেশি মদ, এলএসডি, আইস এবং এসব সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। পরীমণিকে এখন নানা অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পরীমণিকে আটকের পর বুধবার রাতে বনানীর ৭ নম্বর রোডে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, পরীমণিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নজরুল ইসলাম রাজের নামটি সামনে আসে। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরীমণির। একাধিক সময় ফেসবুক লাইভে কথা বলার সময় রাজ অভিনেত্রীর পাশে ছিলেন।
নজরুল ইসলাম রাজ সম্পর্কে খন্দকার আল মঈন জানান, রাজ ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। এর আগে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান ও মো. মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানের সহযোগিতায় ১০-১২ জনের একটি ‘সিন্ডিকেট’ গড়ে তুলছিলেন রাজ। এই সিন্ডিকেট রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিশেষ করে গুলশান,বনানী, বারিধারায় বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানা ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডের’ ব্যবস্থা করতেন।