সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তার মরদেহ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আনা হয়।
জুমার নামাজ শেষে জানাজা পড়ান বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. রুহুল আমিন। জানাজায় অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবীবুল আওয়াল। জানাজা শেষে তার মরদেহে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়।
জানাজায় অংশ নেন কাজী হাবীবুল আওয়াল। তিনি বলেন, আমার কাছে তার পরিচয় একজন লেখক হিসেবে। ইতিহাস নিয়ে বেশ ভালো কিছু লেখা লিখেছেন। উনি লেখক হিসেবেই যেন বেঁচে থাকেন।
মাহবুব তালুকদারের ছেলে কানাডাপ্রবাসী শোভন মাহবুব বলেন, আমার বাবা নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কথা ও কাজে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে তাকে মাফ করে দেবেন।
এর আগে বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর একটার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মাহবুব তালুকদারের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়। তার স্ত্রীর নাম নীলুফার বেগম। দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে তখনকার জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন মাহবুব তালুকদার। মাহবুব তালুকদার ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে উপসচিবের পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির ‘স্পেশাল অফিসার’ নিযুক্ত করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহর সময়ে তার পাবলিক রিলেশনস অফিসার ছিলেন মাহবুব তালুকদার।
২০১৭-২০২২ মেয়াদে কেএম নূরুল হুদার কমিশনে নির্বাচন কমিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব তালুদকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় সহকারী প্রেস সচিবের (উপসচিব) দায়িত্ব পালন করেন মাহবুব তালুদকার। একসময় তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকও ছিলেন।
সাবেক এই আমলা লেখালিখিও করতেন নিয়মিত। কবিতা, গল্প, উপন্যস, স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪০টি। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মাহবুব তালুকদার।