ঢাকা ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে: ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি ফরিদপুরে বৃত্তি পরীক্ষায় সুযোগের দাবিতে ৩৮ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানববন্ধন রাশিয়ায় ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প: সবচেয়ে শক্তিশালী দশটি ভূমিকম্পের তালিকায় স্থান প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের পর সুনামি আতঙ্কে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ৫২ দেশ-অঞ্চল রাশিয়ায় ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত, সুনামি সতর্কতা জারি এক নজরে বিশ্ব সংবাদ: ২৯ জুলাই ২০২৫ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা আজকের নামাজের সময়সূচি ৩০ জুলাই গভীরতম পরিবর্তন যদি না করি, স্বৈরাচার ফিরে আসবে: প্রধান উপদেষ্টা

দিনে উড়ল ঘুড়ি, রাতে আলোর খেলা : পুরান ঢাকার সাকারাইন উৎসব

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১
  • ২৭১ Time View
ঘুড়ির নাম কোভিড ১৯, তাতে করোনাভাইরাসের নকশা আঁকা। আরেকটি ঘুড়িতে আঁকা মাস্কের ছবি, সেটিতে লেখা—নো মাস্ক, নো কাইট। আজ বৃহস্পতিবার সাকরাইন উৎসবে পুরান ঢাকার আকাশে উড়েছিল এমন করোনাময় নানা ঘুড়ি। যেন ঘুড়ির মতোই করোনাকে উড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন।
বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধুপখোলা মাঠে ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ঘুড়ি-সাকরাইন উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ঘুড়ি উৎসব পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য। আমাদের আবহমান সংস্কৃতির অংশ হচ্ছে ঘুড়ি উৎসব। কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির হিংস্র থাবায় আমাদের অনেক সংস্কৃতি এখন হুমকির মুখে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিশোর-তরুণ সবাই ঘুড়ি উড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ঘুড়ি উড়ানোর সুযোগ বড় শহরে কমে গেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে খেলার মাঠ সেভাবে নেই। ছাদে উঠে ঘুড়ি উড়ানোর বিষয়টাও অনেকাংশে সঙ্কোচিত হয়ে গেছে। যে কারণে আমাদের তরুণরা এখন আর ঘুড়ি উড়াতে পারে না। তিনি বলেন, এ ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে যে কি মজা ও উত্তেজনা সেটা আসলে যারা ঘুড়ি উড়াননি তারা বুঝতে পারবেন না। এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাই এ উৎসব যারা আয়োজন করেছেন তাদের। আসলে আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে এ সমস্ত উৎসবের মধ্য দিয়ে এ করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের উৎসাহিত করা, তরুণদের উৎসাহিত করা এগুলো কিন্তু উৎসাহ উদ্দীপনা সংকট পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।
মন্ত্রী বলেন, সমগ্র পৃথিবী যখন করোনা মহামারিতে আক্রান্ত তখন প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দেশের জনগণের শিক্তিতে কোনো কাজ থেমে নেই, সবকিছু চলছে। এটির অত্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ও প্রচুর জীবনীশক্তি সম্পন্ন জনগোষ্ঠী এ সংকটকে মোকাবিলা করছে। তিনি আরো বলেন, আমি প্রায় টেলিভিশনে দেখতাম পুরান ঢাকায় ঘুড়ি উৎসব হয়। সেখানে উৎসব মুখর পরিবেশে রং বেরঙের ঘুড়ি উড়ানো হয়। সেটি শুধু টেলিভিশনেই দেখেছি, এবার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। ছোট বেলায় ঘুড়ি উড়াতাম, এখনতো আর ঘুড়ি উড়ানো যাচ্ছে না। তাই ঘুড়ি উৎসবে আসার সুযোগটা মিস করেনি। সেজন্য আমি অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে এখানে এসেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি,  ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া,ঢাকা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শামীম সিদ্দিকী, সেক্রেটারি আক্তার হোসেন, সহ-সভাপতি লাবণ্য ভূঁইয়া ও ৩৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আহমেদ ইমতিয়াজ গৌরব প্রমুখ।
সন্ধ্যার পর পর্যন্ত থেকে দেখা গেল, দিনে যে উৎসব ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর, রাতে তা-ই পরিণত হয়েছে আলোর খেলায়। বেশির ভাগ বাড়ির ছাদই আলোকসজ্জা করা। কোনো বাড়ির ছাদ থেকে ফোটানো হয় আতশবাজি, কোনো বাড়ির ছাদ থেকে ওড়ানো হয় ফানুস। কোথাও কোথাও মুখে কেরোসিন নিয়ে মশালে ফুঁ দিয়ে তৈরি করা হয় আগুনের হলকা।

কয়েক বছর ধরে দুই দিনব্যাপী সাকরাইন উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এবারও স্থানীয়দের আয়োজন দুদিনের। তবে স্থানীয়দের পাশাপাশি এবার প্রথমবারের মতো ডিএসসিসির পক্ষ থেকে একযোগে ৭৫টি ওয়ার্ডে এ আয়োজন করা হয়।

ডিএসসিসির মেয়র তাপস বলেন, ‘করোনার কারণে পুরো বিশ্ব থমকে রয়েছে। আজ ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবের মাধ্যমে ঢাকার পুরো আকাশ আমরা রঙিন করে দিয়েছি। এ আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই, করোনার মধ্যেও আমরা আনন্দ করতে জানি, উৎসব করতে জানি, আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে জানি।’

Tag :
জনপ্রিয়

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে: ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

দিনে উড়ল ঘুড়ি, রাতে আলোর খেলা : পুরান ঢাকার সাকারাইন উৎসব

Update Time : ০৪:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১
ঘুড়ির নাম কোভিড ১৯, তাতে করোনাভাইরাসের নকশা আঁকা। আরেকটি ঘুড়িতে আঁকা মাস্কের ছবি, সেটিতে লেখা—নো মাস্ক, নো কাইট। আজ বৃহস্পতিবার সাকরাইন উৎসবে পুরান ঢাকার আকাশে উড়েছিল এমন করোনাময় নানা ঘুড়ি। যেন ঘুড়ির মতোই করোনাকে উড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন।
বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধুপখোলা মাঠে ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ঘুড়ি-সাকরাইন উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ঘুড়ি উৎসব পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্য। আমাদের আবহমান সংস্কৃতির অংশ হচ্ছে ঘুড়ি উৎসব। কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির হিংস্র থাবায় আমাদের অনেক সংস্কৃতি এখন হুমকির মুখে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিশোর-তরুণ সবাই ঘুড়ি উড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ঘুড়ি উড়ানোর সুযোগ বড় শহরে কমে গেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে খেলার মাঠ সেভাবে নেই। ছাদে উঠে ঘুড়ি উড়ানোর বিষয়টাও অনেকাংশে সঙ্কোচিত হয়ে গেছে। যে কারণে আমাদের তরুণরা এখন আর ঘুড়ি উড়াতে পারে না। তিনি বলেন, এ ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে যে কি মজা ও উত্তেজনা সেটা আসলে যারা ঘুড়ি উড়াননি তারা বুঝতে পারবেন না। এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাই এ উৎসব যারা আয়োজন করেছেন তাদের। আসলে আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে এ সমস্ত উৎসবের মধ্য দিয়ে এ করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের উৎসাহিত করা, তরুণদের উৎসাহিত করা এগুলো কিন্তু উৎসাহ উদ্দীপনা সংকট পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করে।
মন্ত্রী বলেন, সমগ্র পৃথিবী যখন করোনা মহামারিতে আক্রান্ত তখন প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও দেশের জনগণের শিক্তিতে কোনো কাজ থেমে নেই, সবকিছু চলছে। এটির অত্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ও প্রচুর জীবনীশক্তি সম্পন্ন জনগোষ্ঠী এ সংকটকে মোকাবিলা করছে। তিনি আরো বলেন, আমি প্রায় টেলিভিশনে দেখতাম পুরান ঢাকায় ঘুড়ি উৎসব হয়। সেখানে উৎসব মুখর পরিবেশে রং বেরঙের ঘুড়ি উড়ানো হয়। সেটি শুধু টেলিভিশনেই দেখেছি, এবার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। ছোট বেলায় ঘুড়ি উড়াতাম, এখনতো আর ঘুড়ি উড়ানো যাচ্ছে না। তাই ঘুড়ি উৎসবে আসার সুযোগটা মিস করেনি। সেজন্য আমি অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে এখানে এসেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি,  ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া,ঢাকা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শামীম সিদ্দিকী, সেক্রেটারি আক্তার হোসেন, সহ-সভাপতি লাবণ্য ভূঁইয়া ও ৩৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আহমেদ ইমতিয়াজ গৌরব প্রমুখ।
সন্ধ্যার পর পর্যন্ত থেকে দেখা গেল, দিনে যে উৎসব ছিল ঘুড়ি ওড়ানোর, রাতে তা-ই পরিণত হয়েছে আলোর খেলায়। বেশির ভাগ বাড়ির ছাদই আলোকসজ্জা করা। কোনো বাড়ির ছাদ থেকে ফোটানো হয় আতশবাজি, কোনো বাড়ির ছাদ থেকে ওড়ানো হয় ফানুস। কোথাও কোথাও মুখে কেরোসিন নিয়ে মশালে ফুঁ দিয়ে তৈরি করা হয় আগুনের হলকা।

কয়েক বছর ধরে দুই দিনব্যাপী সাকরাইন উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এবারও স্থানীয়দের আয়োজন দুদিনের। তবে স্থানীয়দের পাশাপাশি এবার প্রথমবারের মতো ডিএসসিসির পক্ষ থেকে একযোগে ৭৫টি ওয়ার্ডে এ আয়োজন করা হয়।

ডিএসসিসির মেয়র তাপস বলেন, ‘করোনার কারণে পুরো বিশ্ব থমকে রয়েছে। আজ ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসবের মাধ্যমে ঢাকার পুরো আকাশ আমরা রঙিন করে দিয়েছি। এ আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই, করোনার মধ্যেও আমরা আনন্দ করতে জানি, উৎসব করতে জানি, আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে জানি।’