ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় স্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে ওই নেতার ঘরের মধ্যেই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে তাদেরকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আহত ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম মো. নুরুজ্জামান ওরফে টুকু ঠাকুর (৭৫) ও তাঁর স্ত্রীর নাম জিনিয়ারা বেগম (৫৫)। মো. নুরুজ্জামান অবিভক্ত নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য। প্রবীণ এই আ.লীগ নেতা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের মৃত গোলাম রসুল ঠাকুরের ছেলে।
নুরুজ্জামানের ছেলে বাদল ঠাকুর অভিযোগ করে বলেন, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আমার বাবা নুরুজ্জামান নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্রী প্রার্থী মো. রফিক মোল্লা বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনের আগে নির্বাচনী সহিংসতায় রফিক মোল্লার সমর্থক খারদিয়া গ্রামের মো. মারিছ সিকদার নিহত হয়। নিহতের ঘটনায় আমার বাবাকে আসামী করা হয়। নির্বাচনের পর ওই হত্যা মামলায় কারাগারে ছিলেন আমার বাবা। গত তিনদিন আগে জেল থেকে বাবা জামিনে বের হয়ে এক আত্মীয় বাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে শনিবার সকালে আমার বাবা নিজ বাড়িতে গেলে নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান রফিক মোল্লার সমর্থক দুই নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. ইরন খন্দকার, এবং তার সহযোগী নুর আমিন খন্দকার ও হেমায়েত মোল্লাসহ ৮-১০ জন বাড়িতে এসে বাবাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় হামলা ঠেকাতে এলে আমার বৃদ্ধা মা এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। পরে স্থানীরা আহত আমার বাবা ও মাকে উদ্ধার করে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রীকে মারপিট করে আহত করার অভিযোগ অস্বকীর করে দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইরন খন্দাকার বলেন, এ হামলার বিষয় তিনি কিছুই জানেন না কিংবা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে এ ব্যাপারে তার কোন ধারণা নেই।
ঘটনা সম্পর্কে যদুনন্দী ইউপির নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. রফিক মোল্লা বলেন, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় তার সমর্থক ইউপি সদস্য ইরন খন্দকার জড়িত নন।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, নুরুজ্জামান তিনি মারিছ সিকদার হত্যা মামলার আসামী। মারিছের পরিবারের সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, যারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক না কেন এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতার উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে
পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিজ বাড়িতে স্ত্রীসহ ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।