ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
রোজার অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও মাছ ও মাংসের দাম এখনোও চড়া, নিত্যপণ্য আকাশচুম্বী আজ সকাল ৮টায় বিক্রি শুরু হয়েছে আগামী ৮ এপ্রিলের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ হাজার ৫৫২ জনে সিরিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল বাহিনী, ৩৬ সেনা নিহত প্রাথমিকের শেষ ধাপের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আজ আজকে কোন টিভি চ্যানেলে কোন খেলা স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে বাংলাদেশের প্রথম শরফুদ্দৌলা ঢাবির সব ইউনিটে ভর্তির ফল প্রকাশ, দেখবেন যেভাবে একনেক সভায় প্রায় ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন

সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী আজ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৩:৫৮:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • ১০০ Time View

সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট)।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুসারে দ্বাপর যুগের শেষভাগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় মামা কংসের কারাগারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। শ্রীকৃষ্ণের এই জন্ম তিথিকে ঘিরে উৎসবের আয়োজন করা হয়। আজ রাত ৯টা ৪০ মিনিটে অষ্টমী তিথি শুরু হবে এবং আগামীকাল শুক্রবার রাত ১১টা ২৯ মিনিটে অষ্টমী তিথি শেষ হবে।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে, ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হয়ে শ্রীকৃষ্ণ এই দিন জন্ম নিয়েছিলেন মাতা দেবকীর গর্ভে। ছোটবেলায় তাঁকে সবাই আদর করে গোপাল বলে ডাকত। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে এই দিন শ্রীকৃষ্ণ বা গোপাল পূজার আয়োজন করা হয়। তিনি গোবর্ধন পর্বতকে এক আঙুলে তুলেছিলেন বলে তাঁর আরেক নাম গোবর্ধন। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীকে কৃষ্ণষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী এবং শ্রী জয়ন্তীও বলা হয়।

হিন্দু পুরান মতে, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এ পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিহীন পৃথিবীতে শান্তি আনতেই শান্তিদাতা শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব।

তার শিক্ষা হলো- অন্যায়কে পরাভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তার জন্মের সময় এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পাপ ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ ছিল। নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণ মানব জাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। ইতিহাসে তিনি যাদবকৃষ্ণ ও দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবত গীতায় তিনি অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ। ঈশ্বরতত্ত্বের মহান প্রতীক শ্রীকৃষ্ণ বেদে ঋষিকৃষ্ণ, দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে তিনি রাজর্ষি কৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। তার বাণী সমগ্র বিশ্বকে হাজার হাজার বছর ধরে আলোড়িত করছে।

জন্মাষ্টমীর তারিখ এবং শুভ সময়

তারিখ- ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবার

অষ্টমী শুরু– ১৮ আগস্ট রাত ৯টা ২১ মিনিট থেকে ।

অষ্টমী শেষ– ১৯ আগস্ট রাত ১০টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ।

শুভ মুহূর্ত – ১৮ আগস্ট দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে ১২টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত ।

বৃদ্ধি যোগ – ১৭ আগস্ট রাত ৮ টা ৫৬ মিনিট থেকে ১৮ আগস্ট রাত ৮টা ৪১ মিনিট ।

জন্মাষ্টমীর দিন রাহু কাল ১৮ আগস্ট দুপুর ২টা ৬ মিনিটে শুরু হবে এবং ৩টা ৪২ মিনিটে শেষ হবে । এই সময়ে কোনও অশুভ কাজ করবেন না ।

জন্মাষ্টমী পুজো বিধি

জন্মাষ্টমীর দিন রাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন  শ্রীকৃষ্ণ । এই দিনে শ্রীকৃষ্ণকে দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। তার পর পরানো হয় নতুন পোশাক । এরপর ময়ূরের পালক, বাঁশি, মুকুট, চন্দন, মালা, তুলসি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয় গোপালকে ।  ফল, ফুল, মাখন, মাখন, চিনি, মিষ্টি, শুকনো ফল ইত্যাদি নিবেদন করুন । তার পর শ্রীকৃষ্ণের সামনে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালান । শেষে শ্রীকৃষ্ণের শিশুরূপের আরতি করুন । সকলের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন ।

জন্মাষ্টমী কেন পালন করা হয় ?

পাপমোচন ও ধর্মসংস্থাপন ও সাধুপরিত্রাণের জন্য ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম ।
এই দিনটিতে ব্রতপালন করলে মনের ও শরীরের ময়লা দূর হয় । সৎগুণের জয় হয় যার ফলস্বরূপ সাধু উদ্ধার হয় ।
সূক্ষ্মার্থে জন্মমৃত্যুর মাঝের অল্প সময়ের জীবনে পাপ থেকে দূরে থাকলে ও সৎ বৃত্তির বিকাশ হলে পৃথিবীতে পাপ ভোগ করতে আসতে হয়না ।

জন্মাষ্টমী পূজার উপকরন

আগের দিন নিরামিষ খেতে হয় ও রাত্রে উপাষ করতে হয় । পরের দিন উপাষ করে রাত্রির প্রথম প্রহরে কৃষ্ণের আরাধনা পূর্বক পূজো করতে হয় । নাড়ু ,ক্ষীর, তালবোড়া, লুচি, মিছরি, মাখন, আতপচাল, তুলসীপাতা, ফুল, সাদাফুল, ফল, দূর্বা, ধূপ দীপ, গব্য, গুড়ি, বর্ণগুঁড়ি, পাট, বালি, মধুপর্কের বাটী, আসন, অঙ্গুরী সহযোগে কৃষ্ণের পূজো করতে হয় । গীতা পাঠ করতে হয় ।

আমরা শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দিবস (জন্মাষ্টমী) পালন করি, কিন্তু মৃত্যু দিবস পালন করিনা কেন ?

মৃত্যুদিবস ! কার মৃত্যুদিবস ? পরমেশ্বরের ? ঈশ্বর তো মৃত্যুবরণ করেন নি । তিনি তো লীলা সংবরন করেছিলেন মাত্র । হয়তো আপনারা এবার বলতে পারেন,  যাঁর জন্ম হয়েছে তাঁর মৃত্যুও আছে । হ্যাঁ, ঠিকই তো যার জন্ম আছে তাঁর অবশ্যই মৃত্যু ও আছে ।
কিন্তু সেটি শুধু আমাদের মতো সাধারন মানুষের জন্য । ভগবান তো জন্ম-মৃত্যু রহিত । কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি জীবের কল্যাণে, লোক শিক্ষা প্রদানের জন্য জন্মগ্রহন করেছিলেন । ভগবান কখনও সাধারণ মানুষকে বলেন না, “আমি তোমাদের ভগবান’’ জ্ঞানীরা তা বুঝে নেন । আর যারা তাঁর লীলা বুঝতে সক্ষম তাঁদেরকেই তিনি নিজ মহিমা বলেন । আর বাকিদের জন্য এমন কিছু করে যান যাতে তাঁরা ভগবানকে বুঝতে পারেন ।

আজ শুভ জন্মাষ্টমী দেশব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, ধর্মীয় আড়ম্বর ও আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপন করা হবে। এদিন সব অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করার শপথ নেবেন কৃষ্ণপ্রেমীরা।

মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ ও কাল শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। আজ সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় অনুষ্ঠিত হবে গীতাযজ্ঞ। বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে শ্রীকৃষ্ণ পূজা।

আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তার আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বুধবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আমরা বিশ্বাস করি- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’

করোনাভাইরাস বাস্তবতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জন্মাষ্টমীর এ উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ভক্তগণকে তার জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে আরও অনুপ্রেরণা জোগাবে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে তিনি দেশের সব নাগরিকের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।

Tag :
জনপ্রিয়

রোজার অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও মাছ ও মাংসের দাম এখনোও চড়া, নিত্যপণ্য আকাশচুম্বী

সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী আজ

Update Time : ০৩:৫৮:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি, শুভ জন্মাষ্টমী আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট)।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুসারে দ্বাপর যুগের শেষভাগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় মামা কংসের কারাগারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। শ্রীকৃষ্ণের এই জন্ম তিথিকে ঘিরে উৎসবের আয়োজন করা হয়। আজ রাত ৯টা ৪০ মিনিটে অষ্টমী তিথি শুরু হবে এবং আগামীকাল শুক্রবার রাত ১১টা ২৯ মিনিটে অষ্টমী তিথি শেষ হবে।

হিন্দু পঞ্জিকা মতে, ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার হয়ে শ্রীকৃষ্ণ এই দিন জন্ম নিয়েছিলেন মাতা দেবকীর গর্ভে। ছোটবেলায় তাঁকে সবাই আদর করে গোপাল বলে ডাকত। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে এই দিন শ্রীকৃষ্ণ বা গোপাল পূজার আয়োজন করা হয়। তিনি গোবর্ধন পর্বতকে এক আঙুলে তুলেছিলেন বলে তাঁর আরেক নাম গোবর্ধন। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীকে কৃষ্ণষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী এবং শ্রী জয়ন্তীও বলা হয়।

হিন্দু পুরান মতে, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এ পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিহীন পৃথিবীতে শান্তি আনতেই শান্তিদাতা শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব।

তার শিক্ষা হলো- অন্যায়কে পরাভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তার জন্মের সময় এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পাপ ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ ছিল। নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণ মানব জাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। ইতিহাসে তিনি যাদবকৃষ্ণ ও দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবত গীতায় তিনি অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ। ঈশ্বরতত্ত্বের মহান প্রতীক শ্রীকৃষ্ণ বেদে ঋষিকৃষ্ণ, দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে তিনি রাজর্ষি কৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। তার বাণী সমগ্র বিশ্বকে হাজার হাজার বছর ধরে আলোড়িত করছে।

জন্মাষ্টমীর তারিখ এবং শুভ সময়

তারিখ- ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবার

অষ্টমী শুরু– ১৮ আগস্ট রাত ৯টা ২১ মিনিট থেকে ।

অষ্টমী শেষ– ১৯ আগস্ট রাত ১০টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ।

শুভ মুহূর্ত – ১৮ আগস্ট দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে ১২টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত ।

বৃদ্ধি যোগ – ১৭ আগস্ট রাত ৮ টা ৫৬ মিনিট থেকে ১৮ আগস্ট রাত ৮টা ৪১ মিনিট ।

জন্মাষ্টমীর দিন রাহু কাল ১৮ আগস্ট দুপুর ২টা ৬ মিনিটে শুরু হবে এবং ৩টা ৪২ মিনিটে শেষ হবে । এই সময়ে কোনও অশুভ কাজ করবেন না ।

জন্মাষ্টমী পুজো বিধি

জন্মাষ্টমীর দিন রাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন  শ্রীকৃষ্ণ । এই দিনে শ্রীকৃষ্ণকে দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। তার পর পরানো হয় নতুন পোশাক । এরপর ময়ূরের পালক, বাঁশি, মুকুট, চন্দন, মালা, তুলসি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয় গোপালকে ।  ফল, ফুল, মাখন, মাখন, চিনি, মিষ্টি, শুকনো ফল ইত্যাদি নিবেদন করুন । তার পর শ্রীকৃষ্ণের সামনে প্রদীপ ও ধূপ জ্বালান । শেষে শ্রীকৃষ্ণের শিশুরূপের আরতি করুন । সকলের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন ।

জন্মাষ্টমী কেন পালন করা হয় ?

পাপমোচন ও ধর্মসংস্থাপন ও সাধুপরিত্রাণের জন্য ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম ।
এই দিনটিতে ব্রতপালন করলে মনের ও শরীরের ময়লা দূর হয় । সৎগুণের জয় হয় যার ফলস্বরূপ সাধু উদ্ধার হয় ।
সূক্ষ্মার্থে জন্মমৃত্যুর মাঝের অল্প সময়ের জীবনে পাপ থেকে দূরে থাকলে ও সৎ বৃত্তির বিকাশ হলে পৃথিবীতে পাপ ভোগ করতে আসতে হয়না ।

জন্মাষ্টমী পূজার উপকরন

আগের দিন নিরামিষ খেতে হয় ও রাত্রে উপাষ করতে হয় । পরের দিন উপাষ করে রাত্রির প্রথম প্রহরে কৃষ্ণের আরাধনা পূর্বক পূজো করতে হয় । নাড়ু ,ক্ষীর, তালবোড়া, লুচি, মিছরি, মাখন, আতপচাল, তুলসীপাতা, ফুল, সাদাফুল, ফল, দূর্বা, ধূপ দীপ, গব্য, গুড়ি, বর্ণগুঁড়ি, পাট, বালি, মধুপর্কের বাটী, আসন, অঙ্গুরী সহযোগে কৃষ্ণের পূজো করতে হয় । গীতা পাঠ করতে হয় ।

আমরা শ্রীকৃষ্ণের জন্ম দিবস (জন্মাষ্টমী) পালন করি, কিন্তু মৃত্যু দিবস পালন করিনা কেন ?

মৃত্যুদিবস ! কার মৃত্যুদিবস ? পরমেশ্বরের ? ঈশ্বর তো মৃত্যুবরণ করেন নি । তিনি তো লীলা সংবরন করেছিলেন মাত্র । হয়তো আপনারা এবার বলতে পারেন,  যাঁর জন্ম হয়েছে তাঁর মৃত্যুও আছে । হ্যাঁ, ঠিকই তো যার জন্ম আছে তাঁর অবশ্যই মৃত্যু ও আছে ।
কিন্তু সেটি শুধু আমাদের মতো সাধারন মানুষের জন্য । ভগবান তো জন্ম-মৃত্যু রহিত । কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি জীবের কল্যাণে, লোক শিক্ষা প্রদানের জন্য জন্মগ্রহন করেছিলেন । ভগবান কখনও সাধারণ মানুষকে বলেন না, “আমি তোমাদের ভগবান’’ জ্ঞানীরা তা বুঝে নেন । আর যারা তাঁর লীলা বুঝতে সক্ষম তাঁদেরকেই তিনি নিজ মহিমা বলেন । আর বাকিদের জন্য এমন কিছু করে যান যাতে তাঁরা ভগবানকে বুঝতে পারেন ।

আজ শুভ জন্মাষ্টমী দেশব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, ধর্মীয় আড়ম্বর ও আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপন করা হবে। এদিন সব অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করার শপথ নেবেন কৃষ্ণপ্রেমীরা।

মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ ও কাল শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। আজ সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় অনুষ্ঠিত হবে গীতাযজ্ঞ। বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে শ্রীকৃষ্ণ পূজা।

আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তার আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বুধবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আমরা বিশ্বাস করি- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’

করোনাভাইরাস বাস্তবতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জন্মাষ্টমীর এ উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ভক্তগণকে তার জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে আরও অনুপ্রেরণা জোগাবে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে তিনি দেশের সব নাগরিকের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।