ঢাকা ০৫:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে ১৫৭২ পরিবার ঘর পাচ্ছেন আগামীকাল, থাকছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা

সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’ কর্মসূচিতে ‘সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২’-এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের ঘরের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে একযোগে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই প্রকল্পের অধীনে জেলার নয়টি উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। এগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন সুবিধাভোগীরা। ইতোমধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

জেলার নয় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত ১৫৭২টি ঘর। ইতোমধ্যেই এই সুবিধাভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ের ২০৩৬ গৃহ নির্মাণ এবং তা উপকারভোগীদের মাঝে বরাদ্দ প্রদানের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ১৫৭২টি গৃহের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। রবিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে একযোগে এই গৃহ সমূহ হস্তান্তর করবেন। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে এ জেলার সকল ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য ভূমি ও আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহারস্বরূপ এসব আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকারভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রæ আমাদের আগামীর পথচলার প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন কাজটিকে এগিয়ে নিতে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরের সামনে চারটি করে ফলদ বৃক্ষ রোপণ।

এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজের মান ঠিক রাখতে। এ কারণে দৈনন্দিন কাজের মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়। তিনি বলেন, এত কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।

এদিকে এই প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মুজিববর্ষের প্রথম আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ ঘর পাচ্ছে ৬০০ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার।

উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে ২৫০টি ঘরকে কেন্দ্র করে চরকাতলাসুর গ্রামে মুজিববর্ষ মডেল ভিলেজ তৈরি করা হচ্ছে। এ আবাসন এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে মসজিদ, মন্দির, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, হাট, খেলার মাঠ, ঈদগাহ মাঠ, কমিউনিটি ক্লিনিক, শিশুপার্ক, ইকোপার্ক ও সামাজিক বনায়ন। ইতোমধ্যে মসজিদ ও মন্দির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী বলেন, প্রথম ধাপে প্রাপ্ত ৩৭০টি ঘর অসহায় পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের প্রাপ্ত ২৩০টি ঘরের কাজ শেষ করা হয়েছে। এলাকার নদী ভাঙন কবলিত, ভূমিহীন ছিন্নমূল মানুষ উপকৃত হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

ফরিদপুরে ১৫৭২ পরিবার ঘর পাচ্ছেন আগামীকাল, থাকছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা

Update Time : ০৬:২২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১

সরকার ঘোষিত ‘মুর্জিব শতবর্ষে থাকবে না কেনো গৃহহীন’ কর্মসূচিতে ‘সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২’-এর আওতায় এবার ফরিদপুরের ১৫৭২ পরিবারের ঘরের অভাব ঘুচবে। আগামী ২০ জুন সারা দেশের সঙ্গে একযোগে ঘরগুলো হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই প্রকল্পের অধীনে জেলার নয়টি উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১৫৭২টি ঘর। এগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর এই কাজ তদারকিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন সুবিধাভোগীরা। ইতোমধ্যেই এই সুবিধা ভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

জেলার নয় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য প্রস্তুত ১৫৭২টি ঘর। ইতোমধ্যেই এই সুবিধাভোগীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ের ২০৩৬ গৃহ নির্মাণ এবং তা উপকারভোগীদের মাঝে বরাদ্দ প্রদানের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ১৫৭২টি গৃহের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। রবিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে একযোগে এই গৃহ সমূহ হস্তান্তর করবেন। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে এ জেলার সকল ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য ভূমি ও আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহারস্বরূপ এসব আশ্রয়স্থল করে দিচ্ছেন। বিভিন্ন উপজেলাতে উপকারভোগীদের মাঝে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, তাদের এই আনন্দ অশ্রæ আমাদের আগামীর পথচলার প্রেরণা হয়ে থাকবে। আমাদের কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন কাজটিকে এগিয়ে নিতে।

ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এই টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২.৮ ফুট প্রস্থের পাকা ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। এছাড়াও রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারের বিশেষ সংযোজন করা হয়েছে প্রতিটি ঘরের সামনে চারটি করে ফলদ বৃক্ষ রোপণ।

এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছি কাজের মান ঠিক রাখতে। এ কারণে দৈনন্দিন কাজের মাঝেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে সব সময়। তিনি বলেন, এত কষ্ট করার পরে যখন হতদরিদ্র এই সুবিধাভোগীদের মুখে হাসি দেখি তখন আমাদের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়।

এদিকে এই প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মুজিববর্ষের প্রথম আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ ঘর পাচ্ছে ৬০০ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার।

উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে ২৫০টি ঘরকে কেন্দ্র করে চরকাতলাসুর গ্রামে মুজিববর্ষ মডেল ভিলেজ তৈরি করা হচ্ছে। এ আবাসন এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে মসজিদ, মন্দির, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, হাট, খেলার মাঠ, ঈদগাহ মাঠ, কমিউনিটি ক্লিনিক, শিশুপার্ক, ইকোপার্ক ও সামাজিক বনায়ন। ইতোমধ্যে মসজিদ ও মন্দির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী বলেন, প্রথম ধাপে প্রাপ্ত ৩৭০টি ঘর অসহায় পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের প্রাপ্ত ২৩০টি ঘরের কাজ শেষ করা হয়েছে। এলাকার নদী ভাঙন কবলিত, ভূমিহীন ছিন্নমূল মানুষ উপকৃত হবে।