মাহিয়া মাহির সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপের জেরে সদ্য বিদায়ী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের অডিও প্রকাশের পরও কোনো ধরনের বিবৃতি দেয়নি সমিতি। এরআগে সম্প্রতি এক মহরত অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে নিয়ে অশোভন কথা বললেও সে কথার প্রতিবাদ করেনি সমিতি।
সহশিল্পীদের নিয়ে সরকারের কাছাকাছি কেউ যাচ্ছেতাই আচরণ করলেও সমিতির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রতিবাদ করা হয় না। এমন অভিযোগ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের। অপরদিকে ‘সাপ্লাইয়ার’র অভিযোগ উঠলেও চিত্রনায়ক ইমনের ব্যাপারেও নেই কোনো বিবৃতি।
যদিও এ ব্যাপারে সমিতির বর্তমান ক্যাবিনেটের একাধিক সদস্য দাবি করেন, কে কিভাবে চলবে এটা তার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। সমিতি সবকিছু নিয়ে কথা বলতে যাবে কেন? কাকে কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে সেটা না জানলে এ লাইনে আসবে কেন? আর লোকেই বা কেন তাদের কাছে পাত্তা পাচ্ছে। এ দায় নিশ্চয়ই সমিতি নেবে না।
একইভাবে সম্প্রতি ডা. মুরাদ হাসানের আরো কিছু বিতর্কিত বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মৌসুমীকে উদ্দেশ্য করে ডা. মুরাদ বলেন, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত-অসাধারণ একটি ছবি। সুপার-ডুপার হিট। মৌসুমী এখনও অভিনয় করছেন। সবই ভালো, শুধু ওয়েটটা কমাতে হবে। ফিল্মে যারা অভিনয় করবেন, তাদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, ওয়েটটার দিকে নজর রাখবেন।’
জানা যায়, গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ‘স্বপ্নের রাজকুমার’ সিনেমার মহরতে উপস্থিত ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। সেখানেই তিনি মৌসুমীকে নিয়ে ওই কটু মন্তব্য করেন।
“একজন নায়িকার ওয়েট কন্ট্রোল করতে হবে। নায়িকার ভূমিকায় কেউ যদি এমন ‘মোটাসোটা’ হয়, এতে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়।”
একইভাবে ঢাকাই ছবির নায়ক শাকিব খানকে নিয়েও ওই অনুষ্ঠানে অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলেছিলেন, করেছিলেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য।
শাকিবের কথা বলতে গিয়ে তাকে তেলাপোকার সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি। বলেন, শাকিব তেলাপোকার মতো অভিনয় করেন।
এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সিনেমা জগতের কেউ প্রতিবাদ করেননি।
‘শাকিবকে তুই তোকারি’ করে কথা বলতেন জানিয়ে ডা. মুরাদ বলেছিলেন ‘আমাদের দেশে কিন্তু ভালো ছবি খুবই কম নির্মাণ হচ্ছে। একটু আগে আমি সোহান ভাইকে বললাম, শাকিবকে দেখলে অনেক সময় আমি দুষ্টামি করে বলি, এই, তুই তো অভিনয় জানোস না। তুই তো শুধু লাফাস।’
সেই অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দাবি ছিল, শাকিব তাকে বলেছেন, এসব বলে তিনি যেন তার মার্কেটটা নষ্ট না করেন। এরপর তিনি বলেছেন, বিষয়টা হলো যে এটা মার্কেট খাওয়ার ব্যাপার না। সিনেমা যদি কেউ দেখে, তার মধ্যে উপজীব্য কিছু যদি না থাকে, স্টোরি, কাহিনি না থাকে, তো তুমি শুধু লাফাইতেছ, নাচতেছ, গান গাইতেছ তেলাপোকার মতো—এটা তো উপভোগ করার চেয়ে পেইন লাগে। এই যে পেইন, এটা থেকে মুক্ত হতে চাই। ’
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর এই দিনের বক্তব্যের সময়ও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান।
তবে একজন শিল্পীর সঙ্গে এমন ‘গর্হিত’ আচরণের প্রতিবাদে সমিতি এখনো নীরব। এ ব্যাপারে বরেণ্য পরিচালক দেওয়ান নজরুলকে নিয়ে অশোভন আচরণে বিতর্কিত সভাপতি মিশা সওদাগর বর্তমানে আমেরিকায় রয়েছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে মেসেজবক্সে জানান ‘মা অসুস্থ’। শেষপর্যন্ত অনুরোধ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমন কি ক্যাবিনেটে থাকা চার নারী সদস্য এ ব্যাপারে কোনো স্বতন্ত্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক ওমর সানির প্রতিক্রিয়া
অডিও ফাঁসের ঘটনা ডা. মুরাদকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক ওমর সানি।
দেশের স্বনামধন্য অভিনেতা ওমর সানি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগছে ইমনের ফোনটাকে ধন্যবাদ, ইমনকে নয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আর মাহি, ওই মুহূর্তে কী বা করার থাকে কী বা বলার থাকে বলুন, আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না। আমি একজন শিল্পী।’