ক্যান্ডি টেস্টে বাংলাদেশকে শক্ত হাতে পাল্টা জবাব দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের ৫৪১ রানের জবাবে লঙ্কানরা দুইশ পার করার আগেই তিন উইকেট হারায়। তবে অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে দাঁত কামড়ে ক্রিজে পড়ে থেকে ব্যবধান কমাচ্ছেন। যদিও এখনও বহু পথ পাড়ি দিতে হবে স্বাগতিকদের। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ ৩১২ রানে এগিয়ে।
তৃতীয় দিন শেষে স্কোর: শ্রীলঙ্কা ৭৩ ওভারে ২২৯/৩ (করুণারত্নে ৮৫*, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৬*); বাংলাদেশ ১৭৩ ওভারে ৫৪১/৭ ডিক্লে.
লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে ১১৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন করুণারত্নে। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান একপ্রান্ত ধরে রেখে খেললেও ওশাডা ফার্নান্ডো (২০) ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের (২৫) কাছ থেকে সহায়তা পাননি। ১৯০ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
তবে করুণারত্নে লঙ্কানদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দিন শেষ হওয়ার আগে তাইজুল ইসলামের এলবিডাব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার তাকে আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। ইনিংসের শুরু আর দিনের শেষে দুইবার আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে সফল তিনি। ৮৫ রানে অপরাজিত করুণারত্নে, তার সঙ্গী ধনঞ্জয়া ডি সিলভা খেলছিলেন ২৬ রানে। ৩ উইকেটে ২২৯ রান করার পথে তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটি ৩৯ রানের।
কঠিন প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছেন দিমুথ করুণারত্নে। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো আউটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে টিকে গেলেন। ইনিংসের শুরুতে প্রথম দফায় তাসকিন আহমেদের বলে কুমার ধর্মসেনা আউট দিলে রিভিউ নেন করুণারত্নে। এরপর পাল্লিয়াগুরুগে তাইজুল ইসলামের এলবিডাব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন। আবারও রিভিউয়ের আবেদন করেন লঙ্কান অধিনায়ক। বল টার্ন করে লেগ স্টাম্প মিস করায় টিকে যান তিনি। তখন তার রান ৮২।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলেননি ব্যক্তিগত কারণে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিরেছিলেন। কিন্তু খুব বড় অবদান রাখতে পারেননি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক ৩২ বলে ৪টি চারে ২৫ রান করে তাইজুল ইসলামের শিকার হলেন। তাকে বোল্ড করে দিমুথ করুণারত্নের সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি ভাঙেন বাংলাদেশি স্পিনার।
করুণারত্নের হাফ সেঞ্চুরি
ক্যান্ডি টেস্টে তৃতীয় দিনের খেলায় শেষ সেশনের শুরুতে শ্রীলঙ্কার আরেক ওপেনার করলেন ফিফটি। অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে ১২২ বলে ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি করেন। এর আগে তার সঙ্গে ১১৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফিরে যান লাহিরু থিরিমান্নে। বাংলাদেশের ৫৪১ রানের জবাবে উদ্বোধনী জুটিতে শতাধিক জুটিতে তার অবদান ছিল ৫৮ রান। লঙ্কানদের একমাত্র উইকেটটি নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
উদ্বোধনী জুটি ভেঙে চা বিরতিতে বাংলাদেশ
ক্যান্ডি টেস্টে শ্রীলঙ্কার ব্যাট হাতে দারুণ অবস্থান তৈরির করার পর বাংলাদেশ অস্বস্তিতে ভুগছিল দিমুথ করুণারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নের জুটির কারণে। দুজনের শতাধিক রানের জুটি চাপ বাড়াচ্ছিল। অবশেষে ১১৪ রানের জুটি ভেঙে খুশি মনে চা বিরতিতে গেলো সফরকারীরা।
থিরিমান্নের বিরুদ্ধে মেহেদী হাসান মিরাজ এলবিডাব্লিউর আবেদন করলে সাড়া দেন আম্পায়ার। লঙ্কান ওপেনার রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে আউট হন ৫৮ রান করে। তার ১২৫ বলের ইনিংসে ছিল ৮ চার।
থিরিমান্নের হাফ সেঞ্চুরি
ক্যান্ডি টেস্টে বাংলাদেশের ৫৪১ রানের জবাবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন শ্রীলঙ্কার ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নে। ২৯তম ওভারের শেষ বলে ফিফটি করেন তিনি ৯৫ বল খেলে। তার সঙ্গে দিমুথ করুণারত্নের জুটি পঞ্চাশ ছাড়ায় লাঞ্চের পর।
লাঞ্চের পরও অপ্রতিরোধ্য শ্রীলঙ্কা
আবু জায়েদ রাহী, ইবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদরা ভাঙতে পারেননি শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ৫৪১ রানের জবাবে লাহিরু থিরিমান্নে ও দিমুথ করুণারত্নে ২২ গজে অপ্রতিরোধ্য।
থিরিমান্নের রিভিউয়ে তাসকিনের হতাশা
এক উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ লাঞ্চে যেতে পারতো। তাসকিন আহমেদের এলবিডাব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট দেন। কিন্তু লাহিরু থিরিমান্নে রিভিউ নেন এবং উইকেট বাঁচান। কোনও উইকেট না হারিয়ে ১১ রানে প্রথম সেশন শেষ করেছে স্বাগতিকরা।
এর আগে ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেও পুরো সময় ব্যাটিং করেনি বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে সফরকারীরা। মুশফিকুর রহিম ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। তাসকিন খেলছিলেন ৬ রানে।
৪ উইকেটে ৪৭৪ রানে শুক্রবার খেলতে নামে বাংলাদেশ। মুশফিকের ২৩তম হাফ সেঞ্চুরির পর তাদের দলীয় স্কোর পাঁচশ ছাড়ায়। লিটন দাশ ফিফটি করার পরের বলেই আউট হন বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে, করেন ৬৭ বলে ৫০ রান। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ (৩) ও তাইজুল ইসলাম (২) দ্রুত বিদায় নেন।
দেশের টেস্ট ইতিহাসে এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ স্কোর। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।