গত ২৪ ঘন্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ২ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল৬টায় বিপৎসীমার ৫৩সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এর ফলে ফরিদপুর সদরের তিনটি, চরভদ্রাসনের চারটি, সদরপুরের দুটি এবং ভাঙ্গার একটি ইউনিয়ন সহ মোট ১১টি ইউনিয়নের ৯২টি গ্রামের দশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের চারটি গ্রাম। ওই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকীবলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বেড়ে যাওযায় ওই ইউনিয়নের দোয়াইর, চর দোয়াইর, ছোটপাল্লা ও বড়পাল্লা নামের চারটিগ্রামের দেড়শ একর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এছাড়া পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ২৫টি পরিবারের ঘর বাড়ি।
ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউয়িনের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান বলেন, তার ইউনিয়নের ১৭ টিগ্রামের দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন,পাঁচটি সড়ক পানির নিচেতলিয়ে গেছে। এর একটি কার্পেটিং করা, দুইটি বিছানোও দুটি কাঁচা সড়ক।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে বন্যার পাশাপাশি ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ওই ইউনিয়নের শুকুর আলী মৃধারডাঙ্গী গ্রামে ৩০ একর ফসলীজমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বসতবাড়ি ভেঙ্গে গেছে৫টি, ভাঙ্গনের মুখে পাঁচটি সরিয়ে নেওয়া হচ্চেছ। এ ইউনিয়নে নতুন করে একমে; টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে আরও ১০০ শুকনো খাবার।আজ বুধবার এগুলি বিতরণ করা হবে।
সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী ও তায়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে পানিবন্দি পরিবার গুলিকে অসহায় এবং অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে সময় কাটাতে দেখা গেছে। ওই দুটি গ্রামের অনেক বাড়ির উঠোন তলিয়ে গেছে। কোন কোন বাড়ির ভিতরে পানি ঢুকেগেছে।
ডিক্রির চর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদীহাসান বলেন, বন্যার কারনে এলাকারসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। তিনি বলেন, বন্যার পানির তোড়ে সড়ক গুলি ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ১১টি সড়কের নয়টি জায়গা ভেঙ্গে গেছে। তিনি বলেন ১৩টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু কারার চেষ্টাচলছে। তিনিবলেন, তার ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে থাকায় ফরিদপুরের আরও দুটি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নতুন করে বন্যা কবলিত হয়েছে।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের ৬টিগ্রামের ৭০০পরিবার, চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ৭টিগ্রামের ৯০০ পরিবার, চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের ৪০০ পরিবার এবং সদর ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ এ ঘটনারসত্যতানিশ্চিতকরেছেন। এদিকে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বাড়ায় সদরপুরের দিয়ারানাড়কেলবাড়িয়া ও চরনাসিরপুর ইউনিয়নের ৩৩টি গ্রামের ১ হাজার ৯০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ফরিদপুর পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, গত ২৪ গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি আরও ২সেমি বেড়ে বিপৎসীমর ৫৩ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পানি বৃদ্ধিরপ্রবণতা কমে আসছে। দুই দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে।