ঢাকা ১১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের আকাশে উঁকি দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ২৮৪ Time View

কাঞ্চনজঙ্ঘার (Kanchenjunga) শৃঙ্গ

কোভিড-১৯’এর (COVID-19) কারণে দীর্ঘ লকডাউন (Lockdown)। আর তার জেরে প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নতি হওয়ায় এবার অক্টোবরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) উত্তর জনপদ জেলা পঞ্চগড়ে দৃশ্যমান কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। তেঁতুলিয়া থেকে দেখা মিলেছে হিমালয় পর্বতমালার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার। খালি চোখে এভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা দেখে উচ্ছ্বসিত তেঁতুলিয়াবাসী।

সাধারণত প্রতি বছর নভেম্বরে তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার (Kanchenjunga) শৃঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এবার পরিবেশ অনুকূল থাকায় সেপ্টেম্বরের মাঝেই দেখা গেল এই মনোরম দৃশ্য।স্থানীয়রা জানান, রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মেঘমুক্ত আকাশে ভোর থেকে তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এটি দৃশ্যমান হয়েছে। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো ও সীমান্তবর্তী মহানন্দা নদীর পাড় থেকে ভালোভাবে দেখা যায় কাঞ্চনের সৌন্দর্য।
আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে তেঁতুলিয়ায় ভিড় করেন পর্যটকরা। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চিনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে, হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। অর্থাৎ তেঁতুলিয়ার সবচেয়ে নিকটে কাঞ্চনজঙ্ঘাই।
বছরের এই সময়ে তেঁতুলিয়ায় মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই বরফাচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘা চোখে পড়ে। বরফের শিখরে রোদ ঠিকরে পড়ে এমন ঝলমল করতে থাকে যে তা এককথায় অপরূপ দৃশ্য। তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে শুক্রবার ঢাকা থেকে গিয়েছিলেন কয়েকবন্ধু বন্ধু। তাঁরা জানান, ”কয়েকদিন ধরেই অপেক্ষা করছি তেঁতুলিয়ায় গিয়ে কাছ থেকে হিমালয় দেখব। কিন্তু আবহাওয়া ভালো না থাকায় ও বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির কারণে আসতে পারিনি। বৃষ্টি থামতেই শনিবার  সন্ধ্যায় চলে এসেছি। রবিবার সকালে কাছ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার এমন রূপ দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।” ঢাকা থেকে যাওয়া আরেক পর্যটক মাহমুদের বক্তব্য, সকালে ট্রেনে পঞ্চগড়ে যাওয়ার সময়ই উত্তরের আকাশে পর্বতশৃঙ্গ দেখা পাওয়া যাচ্ছিল। তাই দেরি না করে তারা তেঁতুলিয়া ছুটে গিয়েছেন।
এদিকে কাঞ্চনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখা দেওয়ার খবরে তেঁতুলিয়ায় শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা উঁকি দেয় পঞ্চগড়ে। মেঘমুক্ত আকাশে খালি চোখে কাঞ্চনকে দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, ভারী বর্ষণে ধূলিকণা কমে যাওয়া ও বৈশ্বিক আবহাওয়া ভালো এবং মেঘমুক্ত আকাশ থাকায় এবার সেপ্টেম্বর থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।
উপজেলার পিকনিক কর্নারে এসে অনেক পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করেন। তাই উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিকনিক কর্নারকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। চলতি বছর সময়ের খানিক আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হওয়ায় আনন্দে বিহ্বল তেঁতুলিয়াবাসী এবং পর্যটক মহল।
Tag :
জনপ্রিয়

বাংলাদেশের আকাশে উঁকি দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা

Update Time : ০৫:৩০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

কোভিড-১৯’এর (COVID-19) কারণে দীর্ঘ লকডাউন (Lockdown)। আর তার জেরে প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নতি হওয়ায় এবার অক্টোবরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) উত্তর জনপদ জেলা পঞ্চগড়ে দৃশ্যমান কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। তেঁতুলিয়া থেকে দেখা মিলেছে হিমালয় পর্বতমালার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার। খালি চোখে এভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা দেখে উচ্ছ্বসিত তেঁতুলিয়াবাসী।

সাধারণত প্রতি বছর নভেম্বরে তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার (Kanchenjunga) শৃঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এবার পরিবেশ অনুকূল থাকায় সেপ্টেম্বরের মাঝেই দেখা গেল এই মনোরম দৃশ্য।স্থানীয়রা জানান, রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মেঘমুক্ত আকাশে ভোর থেকে তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এটি দৃশ্যমান হয়েছে। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো ও সীমান্তবর্তী মহানন্দা নদীর পাড় থেকে ভালোভাবে দেখা যায় কাঞ্চনের সৌন্দর্য।
আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে তেঁতুলিয়ায় ভিড় করেন পর্যটকরা। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চিনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে, হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। অর্থাৎ তেঁতুলিয়ার সবচেয়ে নিকটে কাঞ্চনজঙ্ঘাই।
বছরের এই সময়ে তেঁতুলিয়ায় মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই বরফাচ্ছাদিত কাঞ্চনজঙ্ঘা চোখে পড়ে। বরফের শিখরে রোদ ঠিকরে পড়ে এমন ঝলমল করতে থাকে যে তা এককথায় অপরূপ দৃশ্য। তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে শুক্রবার ঢাকা থেকে গিয়েছিলেন কয়েকবন্ধু বন্ধু। তাঁরা জানান, ”কয়েকদিন ধরেই অপেক্ষা করছি তেঁতুলিয়ায় গিয়ে কাছ থেকে হিমালয় দেখব। কিন্তু আবহাওয়া ভালো না থাকায় ও বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির কারণে আসতে পারিনি। বৃষ্টি থামতেই শনিবার  সন্ধ্যায় চলে এসেছি। রবিবার সকালে কাছ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার এমন রূপ দেখতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।” ঢাকা থেকে যাওয়া আরেক পর্যটক মাহমুদের বক্তব্য, সকালে ট্রেনে পঞ্চগড়ে যাওয়ার সময়ই উত্তরের আকাশে পর্বতশৃঙ্গ দেখা পাওয়া যাচ্ছিল। তাই দেরি না করে তারা তেঁতুলিয়া ছুটে গিয়েছেন।
এদিকে কাঞ্চনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখা দেওয়ার খবরে তেঁতুলিয়ায় শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা উঁকি দেয় পঞ্চগড়ে। মেঘমুক্ত আকাশে খালি চোখে কাঞ্চনকে দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, ভারী বর্ষণে ধূলিকণা কমে যাওয়া ও বৈশ্বিক আবহাওয়া ভালো এবং মেঘমুক্ত আকাশ থাকায় এবার সেপ্টেম্বর থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।
উপজেলার পিকনিক কর্নারে এসে অনেক পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করেন। তাই উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিকনিক কর্নারকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। চলতি বছর সময়ের খানিক আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হওয়ায় আনন্দে বিহ্বল তেঁতুলিয়াবাসী এবং পর্যটক মহল।