শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ রবিবার শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে লঙ্কানদের বিপক্ষে ২০১৮ সালের পর প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। এ জয়ে টাইগারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি লঙ্কানরা। মিরাজ ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। মোস্তাফিজ ৩৪ রানে ৩ উইকেট এবং সাইফ উদ্দিন ৪৯ রানে ২ উইকেট লাভ করেন।
ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভার খেলে ছয় উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে শ্রীলঙ্কা ২২৪ রানে গুটিয়ে যায় ৪৮ ওভার এক বল খেলে।
ম্যাচটিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন মুশফিকুর রহিম। ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ৫২ রান। এর মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারে ১৪ হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম। তাছাড়া এই ম্যাচটিতে একটি উইকেট তুলে নিয়ে সাকিব আল হাসান ক্যারিয়ারে এক হাজার উইকেট পূর্ণ করেন।
ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন কুশাল পেরেরা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট তুলে নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। অপরদিকে শ্রীলঙ্কার হয়ে তিনটি উইকেট নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
শ্রীলঙ্কা প্রথমে ভালো শুরু করলেও মাঝের সময় বাংলাদেশের বোলাররা বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিলে বিপদে পরে যায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু অষ্টম উইকেটে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও ইসরু উদানা মিলে ৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেললে ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে ফসকে যাওয়ার উপক্রম হয়। এর আগে ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকা ২১ রান ও কুশাল পেরেরা ৩০ রান করে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে, পাথুম নিশাকা ১৩ বলে ৮ রান করে মোস্তাফিজের বলে, কুশাল মেন্ডিস ২৪ রান করে সাকিবের বলে, ডি সিলভা ৯ ও আসেন বান্দারা ৩ রান করে মেহেদির বলে আউট হন। বান্দারা আউট হওয়ার সময় লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ১০২ রানে ৬ উইকেট। তাদের সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে দাশুন সানাকা ১৪ রানে আউট হলে। এরপর ২১১ রানে হাসারাঙ্গা ৭৪ রান করে আউট হলে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতে চলে আসে। এই উইকেটটি নেন সাইফউদ্দিন। ২১১ রানেই মোস্তফিজ ২১ রান করা উদানাকে ফিরিয়ে দেন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমেই বিপদে পরে যায় বাংলাদেশ। ওপেনার লিটন দাশ দলীয় ৫ রানের সময় নিজে কোন রান না করেই দুশমন্থ চামিরার বলে ক্যাচ আউট হয়ে যান। এর মাধ্যমে লিটন শেষ পাঁচটি ম্যাচে তিনবার কোন রান করার আগে সাজঘরে ফেরেন। এরপর তিনে ব্যাট করতে আসেন সাকিব। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো তিন নাম্বার পজিশনে ব্যাটে আসেন তিনি। বিশ্বকাপে এই পজিশনে খেলে বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লঙ্কানদের বিপক্ষে ৩৪ বল খেলে মাত্র ১৫ রান করার পর দানুশকা গুনাথিলাকার বলে তিনিও ক্যাচ আউট হন। তখন টাইগারদের রান ৪৩। এরপর ক্রিজে আসেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। তিনি ওপেনার তামিক ইকবালকে নিয়ে দলের হাল ধরেন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৫৫ রানের পার্টনারশিপ। তখন দলীয় ৯৯ রানের সময় ৫২ করে ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ হন তামিম। এরপর ব্যাট করতে নামা মিঠুনও লিটনের মতো ডাক মারেন। তার উইকেটটিও নেন ডি সিলভা। আর এই ম্যাচটিতে ডাক মারায় এখন দ্বিতীয় ম্যাচে মিঠুনকে নাও দেখা যেতে পারে। তার জায়গায় খেলতে পারেন লিটন। আর তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামার সম্ভাবনা রয়েছে সৌম্য সরকারের। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও ইঙ্গিত দিয়েছেন লিটনকে ওপেনিং থেকে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসা হবে। মিঠুন বিদায় নেয়ার পর নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর একপাশ আগলে রাখা মুশফিকের সঙ্গে তিনিই গড়ে তোলেন এই ম্যাচের সবচচেয়ে বড় পার্টনারশিপ। দলীয় ৯৯ রানে চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেটটি হারায় ২০৮ রানের সময়। এ সময় মুশফিক ৮৪ করে লাকসান সান্দাকানের বলে ক্যাচ আউট হন। মুশফিকের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা আফিফ ২২ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তবে এর মাঝে দলীয় ২৩০ রানের মাথায় মাহমুদউল্লাহ ৫৪ রান করে ডি সিলভার বলে আউট হন। অপর ব্যাটসম্যান হিসেবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৯ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।