আওয়ামী লীগ উপ-কমিটির সদস্য পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসা থেকে বিদেশি মদ, বিদেশি কারেন্সি, হরিণের চামড়া, ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে অভিযানের পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসার সামনে গণমাধ্যমের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন র্যাব কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু গণমাধ্যমকে জানান, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিদেশি মদ, ইয়াবা, হরিণ ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া ও দেশিয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া তার বাসা থেকে ক্যাসিনো খেলার সামগ্রী, বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামীকাল (শুক্রবার) তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এখন তাকে র্যাবের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় গুলশান ২ এর ৩৬ নম্বর রোডের হেলেনা জাহাঙ্গীরের ৫ নম্বর বাসায় র্যাব-১ এর একটি দল অভিযান পরিচালনা শুরু করে। হেলেনা জাহাঙ্গীর এই ভবনের পঞ্চম তলায় থাকেন। তার ফ্ল্যাটে প্রায় ঘন্টা সোয়া চারঘন্টা অভিযানের পর রাত সোয়া ১২ টার সময় হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে র্যাবের গাড়িতে তোলা হয়। র্যাবের নারী উইংয়ের কয়েকজন সদস্য এই অভিযান পরিচালনায় অংশ নেন। র্যাবের গাড়িতে উঠার আগে গ্যারেজ পেরুনোর সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর টিভি ক্যামেরা দেখে হাত নাড়েন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভঙ্গিতে দুই হাত নাড়ান। মুখে থাকা মাস্ক খুলে ফেলেন। পাশে দাড়ানো র্যাবের এক সদস্য এই বিষয়ে তার দৃষ্টি আর্কষণ করলে তিনি ফের থুতনিতে নামানো মাস্ক দিয়ে মুখ ঢাকেন।
অভিযান পরিচালনাকালে দীর্ঘ সময় ধরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসভবনের সামনে মিডিয়া কর্মীদের ভিড় লেগেছিল। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিডিয়াকর্মীরা গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এই অভিযান পরিচালনার জন্য ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে অন্যান্য বাসিন্দাদের কাউকে বেরিয়ে যেতে বা কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতেও দেখা যায়নি।
জয়যাত্রা টিভির বৈধ কাগজপত্র নেই
গ্রেফতারকৃত হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা (আইপি টিভি) টিভির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। যাচাই-বাছাই শেষে কাগজপত্র না পাওয়া গেলে টেলিভিশনটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির শাহ।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকালে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির শাহ গণমাধ্যমক বলেন, শুক্রবার ভোর পর্যন্ত মিরপুরের টিভির অফিসটিতে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে টেলিভিশনের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। না দেখাতে পারলে টেলিভিশনটি বন্ধ করা হতে পারে। আমরা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছি। এরপর পরবর্তী সময়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে সেক্ষেত্রে টেলিভিশনটি সিলগালাও হতে পারে।