ফরিদপুরের ভাঙ্গা-সদরপুর আঞ্চলিক সড়কের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের ফুকুরহাটি গ্রামের ‘চাড়াখালি’ খালের উপর নির্মিত সেতু ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। দুর্ঘটনা এড়াতে ২০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর দুই পাশ ও মাঝখানে বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ায় ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের ফুকুরহাটি, বাররা, কাঁঠালবাড়িয়া, নুরুল্লাগঞ্জ, বাকপুরা, ভাঙ্গারদিয়া ও তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দী, চাড়ালদিয়া, কাফরপুর, ভদ্রাসনসহ আশে পশে এলাকার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের এক প্রান্তে ফুকুরহাটি গ্রামের খালের উপর অবস্থিত। সেতুর উত্তর পাশে নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন। দক্ষিণ পাশে তুজারপুর ইউনিয়ন। সেতুর দক্ষিণ পাড়েই তুজারপুর ইউনিয়নের উচাঁবাড়ি গ্রামের উচাঁবাজার নামক ব্যবসাকেন্দ্র অবস্থিত। সেতুর দক্ষিণ পাড়ে ১০০ গজের মধ্যে ফুকুরহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লিটলস্টার কিন্ডারগার্টেন, বড়গ্রাম ফুকুরহাটি নুরানী আলিম মাদ্রাসা। এই সেতু দিয়েই দুই পাড়ের দুই ইউনিয়নের লোকজন বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। পাশাপাশি ভাঙ্গা উপজেলা শহর থেকে উচাঁবাজার হয়ে এ সেতু পার হয়েই সদরপুর উপজেলা শহরে যেতে হয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক এ সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে।
ফুকুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক জগন্নাথ পাল জানান, ১৯৯১ সালে এ সেতুটি নির্মিত হয়। গত ৮/৯ বছর আগে সেতুর দক্ষিণ পাশের কিছু অংশ ভেঙ্গো যায়। ২০১৪ সালে কর্তৃপক্ষ সেতুর দক্ষিণ পাশের এক তৃতীয়াংশ সংস্কার করে।
ফুকুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক ওসমান মিয়া (৪৫) জানান, সেতুর দক্ষিণ অংশ সংস্কার হলেও সেতুর মাঝের অংশ বিভিন্ন সময় ভেঙ্গে যায়। এলাকার মুরুব্বি মুক্তিযোদ্ধা জমির শেখ বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিয়ে সিমেন্ট দিয়ে সংস্কার করেন। দুই বছর আগে সেতুর মাঝখানের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে পড়ে। তার পরেও ছোট যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলতো। কিন্তু গত ২৭ জুলাই বেলা ১১টার দিকে একটি নসিমন সেতু পার হওয়ার পর সেতুর উত্তর পাশের বেশ কিছু অংশ ভেঙ্গে পড়ে। এরপর বন্ধ হয়ে যায় অটো, ভ্যান, রিক্সা, সাইকেলসহ সবধরনের যান চলাচল।
তুজারপুর ইউনিয়নের উচাঁবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৬৫) বলেন, এ সেতু পায়ে হেঁটে পার হওয়াও এখন বিপদজনক।
এলাকার বাসিন্দা মামুন শেখ (৪০) জানান, ২৭ জুলাইয়ের পরে বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে মানুষ চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছি।
এ সড়কের নিয়মিত ভ্যান চালক জালাল মিয়া (৬৪) বলেন, আমরা কম পক্ষে ৫০ জন ভ্যান চালক এই সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছি।
নুরুল্লাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামস বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর আমি ভাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তিনি ২৮ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার পরামর্শে দুই এক দিনের মধ্যে সেতুর পাশ দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরির কাজ শুরু করব।
এলজিইডির ভাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী আঃ মালেক মিয়া বলেন, আমি সরেজমিন সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতু দিয়ে পায়ে হেঁটে চলচলও ঝুঁকি পূর্ণ। তাই নুরুল্লাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানকে সেতুটি পুরো বন্ধ করে দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরির পরামর্শ দিয়েছি। নতুন সেতু নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। ঠিকাদার নির্বাচন এখনও হয়নি।