প্রতি বছর ফিরে ফিরে আসে ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির শাহাদাৎ বার্ষিকী। এদিন আমাদের শোক থেকে শক্তি, শক্তি থেকে জাগরণের শপথ নিতে হবে।পাশাপাশি এক বছরের জন্য শপথ নিতে হবে নিজে যোগ্য ও সুনাগরিক হওয়ার, শোষণের উর্ধে থেকে সৎ হওয়ার। তবেই এ দিনটি পালন সার্থকহবে।
জাতীয়শোকদিবসউপলক্ষে ফরিদপুরে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একথা গুলি বলেন বক্তারা। রবিবার সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হলে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। আলোচনায় অংশ নেন, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান , জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার , , জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, দুই সহ-সভাপতি শামীমহক ও এ কে আজাদ, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশার্রফ আলী, আগর তলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ঝর্ণাহাসান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী মাসুদ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা, রীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, ফয়েজ আহমেদ, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক পান্নাবালা,জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আক্কাস হোসেন, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানজিদুর রশিদ রিয়ান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু, মুক্তি সংগ্রাম এবং বাংলাদেশ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী শিক্ষক রেজভী জামান।
বক্তারা বলেন, আমাদের জাতীয় শোক দিবস পালন করতে হবে শোক থেকে শক্তি, শক্তি থেকে জাগরণের শপথের মধ্যে দিয়ে। প্রতি বছর আমাদের এই শপথ নিতে হবে আগামী এক বছর আমরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবো, দুর্নীতি করবোনা, কাউকে শোষণ করবো না, কারোপ্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবোনা, অন্যায় ভাবে কারও সম্পদ লুটকরবোনা। সর্বপরি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি অবিচল থেকে নিষ্ঠার সাথে কাজ কবরো।
বক্তারা বলেন, প্রতি বছর এ প্রত্যয় নিয়ে আমরা যদি কাজ করতে পারি তাহলে প্রতি বছর আমাদের জাতীয় এ শোক দিবস পালন করা যেমন সার্থক হবে তেমনি বঙ্গবন্ধুর প্রতি জানানো হবে সঠিক শ্রদ্ধা।
এর আগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল ৮ টায় শহরের অম্বিকা ময়দানে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পন করেন।
এর আগে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের ও ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করাহয়। পরে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সোয়া ৭টায় এ জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের, সহ-সভাপতি শামিমহক, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্নাহাসান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভিমাসুদ প্রমুখ।
বিকেল তিনটার দিকে পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পুলিশ লাইনস মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক, সহকারি উপ-পরিদর্শক ও কনস্টেবল নিয়ে আয়োজিত‘ উপস্থিত বক্তৃতা’য় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতের উদ্যোগে বিভিন্ন এতিমখানায় উন্নত মানের খাবার বিতরণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে রুহের মাগফেরাত কামনা করে একশত আলেমদিয়ে একশতবার পবিত্র কোরআন শরীফের খতম ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুর মুসলিম মিশন এতিম খানায় বাদ ফজর পবিত্র কোরআন শরীফের খতম এবং বাদ জহুর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজের পক্ষ থেকে সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বেলা ১১টায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কলেজ ও মাদ্রাসায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন মন্দির ও গির্জায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভবনের শীর্ষে জাতীয় পতাকাঅর্ধ নমিত রাখা হয় এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।