ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা মহামারীকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার

করোনা মহামারীকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। এর ফলে আগামী বছর প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩০ হাজার ৩০৩ জন চরম দরিদ্র হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। ফোর্বস সাময়িকী ও বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ হিসাব দিয়েছে অক্সফাম।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন শুরুর প্রেক্ষাপটে অক্সফাম এ তথ্য জানাল। গত ২২ মে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ২৬ মে পর্যন্ত।

বিশ্বের তথাকথিত এলিট শ্রেণি ১৯৯৫ সাল থেকে দাভোসে এ সম্মেলন করে আসছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর এ সম্মেলন হয়নি। তাই এবার সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শতকোটিপতি, সিইও দাভোসে জড়ো হচ্ছেন। দাভোস সম্মেলন উপলক্ষে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে নিয়মিত এমন তথ্য তুলে ধরে অক্সফাম।

গতকাল সোমবার সংস্থাটি জানায়, করোনা একদিকে যেমন নতুন শতকোটিপতি তৈরি করেছে, অন্যদিকে এ মহামারী বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দিয়েছে। চলতি বছর নতুন করে বিশ্বের ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে বলে ধারণা করছে অক্সফাম। এমন হলে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৩০৩ জন মানুষ চরম দরিদ্র হবে।

মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও এই বিশ্বে নতুন করে ৫৭৩ জন ব্যক্তি শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৩০ ঘণ্টায় শতকোটিপতি হয়েছে একজন।

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, শতকোটিপতিরা তাদের ভাগ্যের অবিশ্বাস্য উন্নতি উদযাপন করতে দাভোসে আসছে। করোনা মহামারী ও বর্তমানে খাদ্য-জ¦ালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক মানুষ অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মুখে পড়েছে। টিকে থাকার জন্য তাদের লড়তে হচ্ছে।

এদিকে মহামারীর সুবাদে যারা শতকোটিপতি হয়েছে, তাদের ওপর ‘সংহতি কর’ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলছে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার লোকজনকে সহায়তার জন্য এ কর আরোপ করা উচিত। পাশাপাশি মহামারী থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার তহবিলেও এ কর কাজে লাগানো যাবে।

অক্সফাম জানায়, কোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ২ শতাংশ ও শতকোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ৫ শতাংশ করারোপ করা হলে এক বছরে ২ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। যা দিয়ে বিশ্বের ২৩০ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণ, পর্যাপ্ত টিকা তৈরি ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব।

Tag :
জনপ্রিয়

করোনা মহামারীকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার

Update Time : ০৪:৪১:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
করোনা মহামারীকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। এর ফলে আগামী বছর প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩০ হাজার ৩০৩ জন চরম দরিদ্র হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। ফোর্বস সাময়িকী ও বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ হিসাব দিয়েছে অক্সফাম।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন শুরুর প্রেক্ষাপটে অক্সফাম এ তথ্য জানাল। গত ২২ মে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ২৬ মে পর্যন্ত।

বিশ্বের তথাকথিত এলিট শ্রেণি ১৯৯৫ সাল থেকে দাভোসে এ সম্মেলন করে আসছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর এ সম্মেলন হয়নি। তাই এবার সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শতকোটিপতি, সিইও দাভোসে জড়ো হচ্ছেন। দাভোস সম্মেলন উপলক্ষে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে নিয়মিত এমন তথ্য তুলে ধরে অক্সফাম।

গতকাল সোমবার সংস্থাটি জানায়, করোনা একদিকে যেমন নতুন শতকোটিপতি তৈরি করেছে, অন্যদিকে এ মহামারী বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দিয়েছে। চলতি বছর নতুন করে বিশ্বের ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে বলে ধারণা করছে অক্সফাম। এমন হলে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৩০৩ জন মানুষ চরম দরিদ্র হবে।

মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও এই বিশ্বে নতুন করে ৫৭৩ জন ব্যক্তি শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৩০ ঘণ্টায় শতকোটিপতি হয়েছে একজন।

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, শতকোটিপতিরা তাদের ভাগ্যের অবিশ্বাস্য উন্নতি উদযাপন করতে দাভোসে আসছে। করোনা মহামারী ও বর্তমানে খাদ্য-জ¦ালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক মানুষ অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মুখে পড়েছে। টিকে থাকার জন্য তাদের লড়তে হচ্ছে।

এদিকে মহামারীর সুবাদে যারা শতকোটিপতি হয়েছে, তাদের ওপর ‘সংহতি কর’ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলছে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার লোকজনকে সহায়তার জন্য এ কর আরোপ করা উচিত। পাশাপাশি মহামারী থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার তহবিলেও এ কর কাজে লাগানো যাবে।

অক্সফাম জানায়, কোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ২ শতাংশ ও শতকোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ৫ শতাংশ করারোপ করা হলে এক বছরে ২ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। যা দিয়ে বিশ্বের ২৩০ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণ, পর্যাপ্ত টিকা তৈরি ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব।