ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা উল্লেখ আছে জাতীয় সংগীত দিয়ে শুরু জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান জাতীয় ঐক্যের নামে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে: এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও রাজনীতিবিদেরা জুলাইযোদ্ধাদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফার সংশোধন জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে থেকে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সরাতে পুলিশের লাঠিপেটা দেওয়াল টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধারা’, বসেছেন অতিথিদের আসনে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন শুরু আজ

অবরুদ্ধ গাজা;পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল, তাও শেষের দিকে

ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। শহরটি খাদ্য সংকটে ভুগছে। কেবল তাই নয়, অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা যাচ্ছে বহু শিশু। খাদ্য সংকটের চরমমাত্রায় এক পর্যায়ে তারা পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল। এখন তাও শেষের দিকে। এই অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বন্য লতাপাতাই শেষ ভরসা। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এ মাসের (মার্চ) শুরুতে গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা হাজেম সাঈদ আল-নাইজির পরিবার জানায়, পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল সদস্যদের। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর সেই খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এখন তার পরিবার বন্য লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে। সিএনএনকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় এমন তথ্য জানিয়েছেন হাজেম সাঈদ।

তিনি বলেছেন, “দুর্ভাগ্যবশত পশুপাখির খাবারও শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন আর এটি পাওয়া যাচ্ছে না।” গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর হামলা চালানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এতে বাড়িঘর হারানো সাধারণ মানুষ খাদ্য সংকটেও পড়েন। এই সংকট এতটাই তীব্র হয়েছে যে, পশুপাখি যেসব খাবার খায় সেসব খাবার খাওয়া শুরু করেন মানুষ। এছাড়া পরিবহন কাজে ব্যবহারের জন্য লালন-পালন করা ঘোড়াও জবাই করে খান তারা। এখন এই খাবারও শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া বন্য লতাপাতা খাচ্ছেন তারা।

হাজেম সাঈদ গত নভেম্বরে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে চলে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তার ৬ বছর বয়সী ছেলেকে।

তার স্ত্রী এবং অন্যান্য সন্তানরা উত্তরাঞ্চলেই রয়ে যায়। যদিও তার স্ত্রী এদিকে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাদের বাধার মুখে আসতে পারেননি। এছাড়া রক্তজনিত সমস্যা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আরেকবার এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে চাননি তিনি।

এরপর থেকে স্ত্রী ও অন্যান্য সন্তানদের কাছ থেকে আলাদাই থাকছেন হাজেম সাঈদ। খান ইউনিসে নিজ ছেলে ও অন্যান্য এতিম শিশুদের দেখাশুনা করছেন তিনি।

সাঈদ বলেছেন, “আমার স্ত্রী আর সন্তানরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। বন্য লতাপাতাও শেষ হয়ে আসছে। এগুলোও হয়ত এক সময় ফুরিয়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাঝে গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় দুইশ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।

Tag :
জনপ্রিয়

জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা উল্লেখ আছে

অবরুদ্ধ গাজা;পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল, তাও শেষের দিকে

Update Time : ০৬:২৩:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। শহরটি খাদ্য সংকটে ভুগছে। কেবল তাই নয়, অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা যাচ্ছে বহু শিশু। খাদ্য সংকটের চরমমাত্রায় এক পর্যায়ে তারা পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল। এখন তাও শেষের দিকে। এই অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বন্য লতাপাতাই শেষ ভরসা। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এ মাসের (মার্চ) শুরুতে গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা হাজেম সাঈদ আল-নাইজির পরিবার জানায়, পশুপাখির খাবার খেয়ে কোনোমতো জীবন বাঁচিয়ে রাখছিল সদস্যদের। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর সেই খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এখন তার পরিবার বন্য লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে। সিএনএনকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় এমন তথ্য জানিয়েছেন হাজেম সাঈদ।

তিনি বলেছেন, “দুর্ভাগ্যবশত পশুপাখির খাবারও শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন আর এটি পাওয়া যাচ্ছে না।” গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর হামলা চালানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। এতে বাড়িঘর হারানো সাধারণ মানুষ খাদ্য সংকটেও পড়েন। এই সংকট এতটাই তীব্র হয়েছে যে, পশুপাখি যেসব খাবার খায় সেসব খাবার খাওয়া শুরু করেন মানুষ। এছাড়া পরিবহন কাজে ব্যবহারের জন্য লালন-পালন করা ঘোড়াও জবাই করে খান তারা। এখন এই খাবারও শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া বন্য লতাপাতা খাচ্ছেন তারা।

হাজেম সাঈদ গত নভেম্বরে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে চলে আসেন। সঙ্গে নিয়ে আসেন তার ৬ বছর বয়সী ছেলেকে।

তার স্ত্রী এবং অন্যান্য সন্তানরা উত্তরাঞ্চলেই রয়ে যায়। যদিও তার স্ত্রী এদিকে আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি সেনাদের বাধার মুখে আসতে পারেননি। এছাড়া রক্তজনিত সমস্যা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় আরেকবার এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে চাননি তিনি।

এরপর থেকে স্ত্রী ও অন্যান্য সন্তানদের কাছ থেকে আলাদাই থাকছেন হাজেম সাঈদ। খান ইউনিসে নিজ ছেলে ও অন্যান্য এতিম শিশুদের দেখাশুনা করছেন তিনি।

সাঈদ বলেছেন, “আমার স্ত্রী আর সন্তানরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। বন্য লতাপাতাও শেষ হয়ে আসছে। এগুলোও হয়ত এক সময় ফুরিয়ে যাবে।”

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

মাঝে গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় দুইশ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।